বিশ্বের মুসলিম উম্মাহ’র সকল ইবাদত একই দিনে (৮ম)
১ম অংশ- http://sottersondhane.blogspot.com/2012/11/blog-post.html
(pls click & read)
১ম অংশে পাবেন-
নামায কিভাবে একই দিনে হয় ? এর কিছু দলিল ।
২য় অংশ- http://sottersondhane.blogspot.com/2012/11/blog-post_5.html
(pls click & read)
২য় অংশে চাঁদ দেখার
স্বাক্ষী কয়জন, কোথাকার তার দলিল পাবেন ।
৩য় অংশে বিশ্বে
চাঁদ দেখার বিভিন্নতা এবং একই ইবাদতের দিন দেশ অনুযায়ী ভিন্ন ভিন্ন হয় । এর কিছু
তথ্য পাবেন ।
৪র্থ অংশে প্রথম
চাঁদ কোনটা গ্রহনযোগ্য এ নিয়ে ফেকাহ শাস্ত্রের দলিল পাবেন ।
৫ম অংশে প্রথম চাঁদ কোনটা গ্রহনযোগ্য এ নিয়ে উল্লেখযোগ্য আলেমেদ্বীন্দের
কিছু ফতোয়া ও দলিল পাবেন ।
৬ষ্ঠ অংশে ৪ মাযহাবের ইমামদের ফতোয়ার দলিল পাবেন ।
৭ম অংশে পূর্বে
কেন তারা বাস্তবায়ন করতে পারেননি, চাঁদ দেখার খবর কিভাবে পৌঁছানো হত এবং আধুনিক
প্রচার মাধ্যম ব্যবহার করা যায় কিনা ? সৌদির সাথে এক করা কুরআন হাদিস অনুযায়ী কিনা
এর কিছু সমাধানের দলিল পাবেন ।
মক্কার সাথে পৃথিবীর যে কোন স্থানের সময়ের ব্যবধান বার ঘন্টার
নিচে (ধরা যাক ১০ ঘন্টা) ।
মক্কায় যখন সন্ধ্যা
তক্ষণাৎ ১ম চাঁদের খবর প্রচার করা হলে অন্য দেশে তখন সুবহে সাদিক হবে । রমযানের
তারাবী, সেহেরী, নিয়ত ঐ দেশের লোকেরা কিভাবে করবে ?
তারাবীর জন্য-
রাসুল (সঃ)
সাহাবায়ে কেরামদের নিয়ে
মাত্র তিন দিন জামাতের সহীত তারাবীর নামায পড়েছেন ।
হযরত আবু যর (রাঃ)
বলেন আমরা রাসুল (সঃ) এর সাথে রোযা রেখেছি, নবী (সঃ) আমাদের তারাবীর নামায পড়ালেন
না, এমনকি রমযানের আর সাত দিন বাকি ছিল অর্থাৎ তেইশ তারিখ পর্যন্ত । তারপর তেইশ তারিখে রাত্রে আমাদের তারাবীর নামায
পড়ালেন তৃতীয়াংশ রাত পর্যন্ত । চব্বিশ তারিখ পড়ালেন না । পঁচিশ তারিখ রাত্রে অর্ধ রাত পর্যন্ত তারাবী পড়ালেন । আমরা বললাম হে
আল্লাহর রাসুল (সঃ)! কতইনা ভাল হত যদি আপনি আমাদের সারারাত নামায পড়াতেন । নবী
(সঃ) বললেন যে ব্যক্তি ইমাম মসজিদ থেকে চলে আসা পর্যন্ত ইমামের সাথে জামাতে নামায
পড়েছে সে সারা রাত ইবাদত করার ছওয়াব পাবে । এরপর যখন সাতাশ তারিখ হয়ে গেছে তখন আবার নামায পড়লেন এবার পরিবারবর্গ এবং মহিলাদেরকেও আহবান করলেন এবং সুবহে ছাদেক পর্যন্ত
নামায পড়ালেন (তিরমিযী । নাসাঈ । ইবনে মাযাহ । সহীহু সুনানি আবি দাউদ ১/৩৭৯ হাঃ
১৩৭৫)
তারাবীর নামায ছাড়া রোযা রাখা যায় ।
উপরের হাদিসটি কি বলছে
ভাল করে বুঝুন, জ্ঞানীদের কাছে জিজ্ঞাসা করে জেনে নিন ?
এছাড়া উক্ত দেশের লোকেরা ব্যক্তিগতভাবে
তাহাজ্জুদ নামায পড়তে
পারে যা তারাবীর সমতুল্য ।
কেউ বলে কিয়ামু
রমযান হলো- তাহাজ্জুদ । কিয়ামু রমাযান
অর্থাৎ তারাবীহ (মুসলিম শরীফ ৩য় খন্ড অনুচ্ছেদ ১০৯ অধ্যায় সালাত পৃঃ ৮৯ ইঃ
ফাঃ)
আনোয়ার শাহ কাশমিরি
হানাফী (রহঃ) লিখেছেন-
আমার নিকট এ দুটি নামায একই নামায । সাধারণ লোকেরা
এটার অর্থ না বুঝে দুটো আলাদা নামায বানিয়ে দিয়েছে (ফয়জুল বারী শরাহ বুখারী ২য়
খন্ড ৪২০ পৃঃ)
দেওবন্দ মাদ্রাসার
প্রটিষ্ঠাতা আল্লামা কাসেম নামুতুবী (রঃ) তার কিতাবে লিখেছেন- জ্ঞানীদের নিকট এ
কথা গোপন নয় যে,
কেয়ামে রমযান ও কেয়ামুল্লায়ল আসলে এ দুটো একই নামায । যেটা মুসলমানদের
সুবিধার জন্য রাতের প্রথম অংশে নির্দিষ্ট করা হয়েছে । কিন্তু গুরুত্ব হচ্ছে শেষ
রাত্রে আদায় করা (ফয়েজে কাসেমিয়া ১৩ পৃঃ)
সেহেরী নিয়তের জন্য-
যাদের দেশে চাঁদ দেখা যায় নাই তারা
২৯ শে শা’বান দিবাগত
রাত্রে সেহেরী খেয়ে রমযানের নিয়ত করতে পারেন ।
যদি দিবাভাগে জানতে পারেন বিশ্বে চাঁদ উদয় হয়েছে তাহলে এক
সাথে হয়ে গেল ।
আর যদি চাঁদ উদয় হয়
নাই জানতে পারেন তাহলে ঐ দিনের রোজা ভেঙ্গে দিবে (যারা নিয়মিত শা’বানের রোজা
রাখে না তাদের জন্য)
ঠিক এমনই একটি সন্দেহযুক্ত দিনে
একবার প্রখ্যাত সাহাবী হযরত আম্মার ইবনে ইয়াসীর (রাঃ) এর সামনে একটি ভূনা বকরী
উপস্থিত হয় এবং তখন তিঁনি (সাঃ) সকলকে বললেন-খাও । কিন্তু জনৈক
ব্যক্তি দূরে সরে গিয়ে বলল-আমি রোজাদার ।
আম্মার
ইবনে ইয়াসীর (রাঃ) বললেন-যে ব্যক্তি সন্দেহযুক্ত দিনে রোজা রাখে সে আবুল কাসিমের
(রসূল সাঃ) সাথে অবাধ্য আচরণ করেছে (সূত্র: আবু দাউদ ৩য় খন্ড/২৩২৭, তিরমিযী)
নবী করীন
(সাঃ) বলেছেন, তোমরা রমজান মাসের একদিন বা দুই দিন আগে থেকে রোযা রেখ না । তবে
কারও যদি আগে থেকেই কোনো নির্দিষ্ট দিন রোযা রাখার অভ্যাস থাকে এবং ঘটনাক্রমে সে
দিনটি ২৯ ও ৩০ শাবান হয় তাহলে সে ওইদিন রোযা রাখতে পারে (সহিহ বুখারী ১/২৫৬
হাঃ/১৯১৪)
আর যারা একেবারেই অলস অজ্ঞ গুরুত্বহীন চেষ্টা করবেন না ঘুম
থেকে জেগে দেখলেন ফজর হয়ে গেছে পরে চাঁদ উদয়ের খবর পেলেন
পূর্বে মনে যদি নিয়ত
থাকে সম্ভব হলে এ অবস্থায় সেহারী না খেয়ে রোজা রাখতে পারেন ।
না রাখলে এক সঙ্গে ঈদ করে
পরে একটি রোজা কাযা করে নিতে পারেন ।
শরীয়া ক্ষেত্রে উদাসীনতার জন্য আল্লাহ’র নিকট খাঁটি তওবা করুন ।
হযরত আসমা বিনতে
আবুবকর (রাজিঃ) বলেন, রাসুল (সাঃ) এর জামানায় একদিন আমরা মেঘের কারনে রোযা ইফতার করেছি, কিন্তু পরে সূর্য দেখা গেছে । [হাদিসের
রাবি বলেন] আমি হিশামের কাছে জিজ্ঞাসা করলাম, মানুষদের কি কাজার আদেশ দেয়া হয়েছিল
? হিশাম বলল, কাজা ব্যতীত অন্য কোন পন্থাও
তো ছিল না ।-ইবনে মাজাহ, সহিহ আল বুখারী ২/২৫৮ হাদিস নং ১৮২০
অনুরুপে বলা যায়, চাঁদ দেখার খবর সুবহে সাদেকের পূর্বে না
পেলে এবং বিশেষ কারনে রোজা রাখতে না পারলে ঈদের পরে কাযা করা যাবে ।
সব কিছু এক সাথে করা সম্ভব নয় । যেমন সেহেরী ও ইফতারের সময়
এবং নামাযের সময় ।
সময় সূর্যের সাথে শয়ীয়া দ্বারা নির্ধারিত ।
সময় এক না হলেও দিন বা
তারিখ (যা চাঁদের সাথে সম্পর্কযুক্ত) এক করা সম্ভব । যা লেখার শুরুতে দেখানো হয়েছে ।
কারো দেশে রাত (দিনের
শুরু) কারো দেশে দিবা (দিনের অর্ধাংশ)
অর্থাৎ একই দিন । এটাই অনেকের বুঝের অভাব ।
আল্লাহ তায়ালা বলেন-পানাহার কর যতক্ষণ না কাল রেখা থেকে
ভোরের শুভ্র রেখা পরিষ্কার দেখা যায় । অতঃপর রোযা পূর্ণ কর রাত পর্যন্ত- আল বাকারা আয়াত
১৮৭)
অতএব সেহরী, ইফতার, নামায সূর্যের সাথে সম্পর্ক করে যার
যার স্থানীয় সময়ে পালিত হবে ।
একসময়
ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ একই রাষ্ট্র ছিল । তখন ভারতের আকাশে চাঁদ দেখা গেলেই
রোযা ও ঈদ পালন করা হতো । ৪৭ এর পর পাক-ভারত আলাদা হয়ে যায় । তখন থেকে দু’দেশের
আকাশও আলাদা হয়ে গেল । ৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্দে বিজয় অর্জনের মাধ্যমে
‘বাংলাদেশ’ নামক রাষ্ট্রের জন্ম হয় । তখন থেকে ‘বাংলাদেশের আকাশ’ নামে একটি
আকাশেরও জন্ম হয়েছে ।
মহান আল্লাহ কি এভাবে পৃথক পৃথক রাষ্ট্রের
জন্য পৃথক আকাশ তৈরি করেছেন ? নি:সন্দেহে ‘না’ ।
আমরা যারা পূর্বে
না জানার কারনে, দ্রুত প্রচার ব্যবস্থা না থাকার কারনে ভুল করেছি তাদের প্রতি
অনুরোধ রইল বিষয়টি যাচাই বাছাই করে দেখুন এবং প্রয়োজনে আপনার পরিচিত
শরিয়া জ্ঞানীদের নিকট মৌখিক না জেনে কুরআন ও সহিহ
হাদিসের পূর্ণাঙ্গ দলিল চেয়ে লিখিত চান কিভাবে সমাধান করা যায় ?
আল্লাহপাক
বলেন- ‘জ্ঞানীরাই চিন্তা-ভাবনা করে’ (সূরা
ইব্রাহীম-৫২)
লেখাটি যারা মনযোগসহ পড়েছেন, বুঝেছেন, ভাল লেগেছে আপনারা
কপি করে, প্রিন্ট মিডিয়া বা অন লাইনের যে কোন সাইটে প্রকাশ করতে পারেন অথবা এর
লিঙ্কটি অন্যদের নিকট ব্যপক প্রচার করতে
পারেন ।
যারা অন্য ভাষায় পারদর্শী আপনারা হুবহু ঐ ভাষায় রূপান্তর
করেও প্রচার, প্রকাশ করতে পারেন ।
কোন ধরণের ভুল পেলে বা কোথাও প্রকাশ করলে আমার মেইল sottersondhane143@gmail.com এ জানাবেন । সংশোধন করব । ইনশা আল্লাহ !
আল্লাহ
আমাদের সঠিক পথ বুঝার তৌফিক দিন ।
**আমীণ**
(চলবে)
৯ম অংশ- http://sottersondhane.blogspot.com/2013/05/blog-post_897.html
(pls click & read)
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন