মানুষ কি নুর দিয়ে তৈরী ? না, মাটির তৈরী !
১ম অংশ পড়তে নীচের লিঙ্কে ক্লিক করুন
২য় অংশ পড়তে নীচের লিঙ্কে ক্লিক করুন
৭) পর্যালোচনা
নবী (সাঃ) কে আল্লাহ মাটির তৈরী
আদম (আঃ) থেকে স্বাভাবিক মানুষের যে নিয়ম আল্লাহ করেছেন সে পদ্ধতিতেই আবদুল্লাহর
ওরসে মা আমিনার গর্ভে এ পৃথিবীতে আগমন ঘটিয়েছেন ।
মহান আল্লাহ একাধিক স্থানে
বলেছেন যে নবী (সাঃ) সৃষ্টিগত দিক থেকে
بشر তথা আমাদের মতই একজন মানুষ ।
৭,১ প্রশ্নঃ
নবী মুহাম্মাদ (সাঃ) আদম সন্তানের বাইরে না ভিতরে ? যদি বলে বাইরে তবে তো তার সাথে
কথা বলা অনর্থক । কারন
মুহাম্মাদ (সাঃ) অন্যান্য মানুষের মতই আদম সন্তান ছিলেন (উপরের ১,১-১,১২ দ্রঃ) ।
আর যদি
বলে যে, তিনিও আদম সন্তানের মধ্যে গণ্য, তখন আমরা বলব আদম (আঃ) কিসের তৈরী,
নুরের না মাটির ?
যদি বলে ‘মাটির তৈরী’ আর এটা বলতে তারা বাধ্য- তাহলে তাদের নিকট
যদি বলে ‘মাটির তৈরী’ আর এটা বলতে তারা বাধ্য- তাহলে তাদের নিকট
প্রশ্নঃ
মাটির তৈরী
পিতার সন্তান কিভাবে নূরের তৈরী হল ?
৭,২ মানুষ যেমন পানাহার করে,
তেমনি মুহাম্মাদ (সাঃ) ও পানাহার করতেন (উপরের ৫,৫ ও ৫,৭ দ্রঃ) ।
৭,৩ অন্যান্য মানুষের যেমন
সন্তানাদি ছিল, তেমনি রাসুলদেরও সন্তানাদি ছিল, স্ত্রীও ছিল । ভূল রাসুলেরও হত (উপরের ৬,১ দ্রঃ) ।
৭,৪ রাসুল (সাঃ) অতি মানব ছিলেন
না যে তিনি মৃত্যু বরণ করবেন না ।
এরশাদ হচ্ছে- “নিশ্চয়ই তুমি মৃত্যুবরণ করবে এবং তারা সকলে
মৃত্যু বরণ করবে” (সূরা যুমার ৩৯:৩০)
৭,৫ আর একথা কিভাবে গ্রহণ করা
যায় যে, তিনি নূরের তৈরী, অথচ যাকে মানব জাতির হেদায়েতের জন্য, অনুসরণীয়
একমাত্র আদর্শ হিসেবে আল্লাহ পাঠালেন মাটির
মানুষদের কাছে ।
“নিঃসন্দেহে তুমি মহান চরিত্রের ওপর (প্রতিষ্ঠিত)
রয়েছো” {সূরা আল ক্বালামঃ আয়াত ৪}
৭,৬ তফসীর মাআরেফুল ক্বোরআন এর ৭৯২
নং পৃষ্টায় আছে-
মানবের রাসুল মানবই হতে পারেনঃ
ভিন্ন শ্রেণীর সাথে পারস্পরিক মিল
ব্যতীত হেদায়েত ও পথ প্রদর্শনের উপকার অর্জিত হয় না । ফেরেশতা ক্ষুধা পিপাসা জানে
না, কাম-প্রবৃত্তিরও জ্ঞান রাখে না এবং শীত গ্রীষ্মের অনুভুতি ও পরিশ্রমজনিত
ক্লান্তি থেকে মুক্ত । এমতাবস্থায় মানুষের প্রতি কোন ফেরেশতাকে রসুল করে প্রেরণ
করা হলে সে মানবের কাছেও উপরোক্ত্ কর্ম আশা করতো এবং মানবের দুর্বলতা ও অক্ষমতা উপলব্ধি করতো না ।
বলুনঃ যদি পৃথিবীতে ফেরেশতারা স্বচ্ছন্দে বিচরণ করত,
তবে আমি আকাশ থেকে কোন ফেরেশতা (নুরের তৈরী) কেই তাদের নিকট পয়গম্বর করে প্রেরণ
করতাম (বনী ইস্রাঈল-৯৫)
৭,৭ নবী রাসুল নুরের তৈরী বা
ফেরেশতা নন তাও আল্লাক তায়ালা কুরআনে উল্লেখ করেছেনঃ-
আর আমি তোমাদেরকে বলিনা যে, আমার কাছে আল্লাহর ভান্ডার
রয়েছে এবং একথাও বলি না যে, আমি গায়বী খবরও জানি; একথাও বলি না
যে, আমি একজন ফেরেশতা (নুরের তৈরী);
আর তোমাদের দৃষ্টিতে যারা লাঞ্ছিত আল্লাহতাদের কোন কল্যাণ দান করবেন না । তাদের
মনের কথা আল্লাহ ভাল করেই জানেন । সুতরাং এমন কথা বললে আমি অন্যায় কারী হব (হূদ-৩১)
৮) বিদআতীরা
নবীকে নূর প্রমাণ করতে যেয়ে দলীল স্বরূপ কুরআন থেকে কতিপয় আয়াত পেশ করে থাকে ।
যেমন,
৮,১ মহান আল্লাহ এরশাদ করেনঃ ‘তোমাদের নিকট নূর-তথা একটি উজ্জ্বল জ্যোতি এবং স্পষ্ট কিতাব এসেছে । এর দ্বারা আল্লাহ যারা তার সন্তুষ্টি কামনা করে, তাদেরকে নিরাপত্তার পথ প্রদর্শন করেন, এবং তাদেরকে স্বীয় নির্দেশ দ্বারা অন্ধকার থেকে বের করে আলোর দিকে আনয়ন করেন এবং সরল পথে পরিচালনা করেন’(সূরাহ আল্ মায়িদাহঃ ১৫-১৬)
অত্র আয়াতে নবীর গুণ স্বরূপ (অথবা আত্মা) তাকে নূর বা জ্যোতি বলা হয়েছে, সৃষ্টিগতভাবে তাকে নূরের তৈরী বলা হয়নি । আর কিভাবে তিনি গুণগতভাবে নূর বা জ্যোতি হলেন, তা সাথে সাথে আল্লাহ পরের আয়াতেই ব্যাখ্যা করে দিয়েছেন ।
৮,১ মহান আল্লাহ এরশাদ করেনঃ ‘তোমাদের নিকট নূর-তথা একটি উজ্জ্বল জ্যোতি এবং স্পষ্ট কিতাব এসেছে । এর দ্বারা আল্লাহ যারা তার সন্তুষ্টি কামনা করে, তাদেরকে নিরাপত্তার পথ প্রদর্শন করেন, এবং তাদেরকে স্বীয় নির্দেশ দ্বারা অন্ধকার থেকে বের করে আলোর দিকে আনয়ন করেন এবং সরল পথে পরিচালনা করেন’(সূরাহ আল্ মায়িদাহঃ ১৫-১৬)
অত্র আয়াতে নবীর গুণ স্বরূপ (অথবা আত্মা) তাকে নূর বা জ্যোতি বলা হয়েছে, সৃষ্টিগতভাবে তাকে নূরের তৈরী বলা হয়নি । আর কিভাবে তিনি গুণগতভাবে নূর বা জ্যোতি হলেন, তা সাথে সাথে আল্লাহ পরের আয়াতেই ব্যাখ্যা করে দিয়েছেন ।
৮,২ এরশাদ
হচ্ছেঃ ‘হে নবী! আমি আপনাকে সাক্ষী, সুসংবাদ দাতা ও সতর্ককারীরূপে প্রেরণ করেছি ।
এবং আল্লাহর আদেশক্রমে তাঁর দিকে আহবায়করূপে এবং উজ্জ্বল প্রদীপরূপে ।
(সূরা আল্ আহযাব: ৪৫-৪৬)
নবীকে উক্ত আয়াতে যে মহান আল্লাহ গুণগত দিক থেকে নূর বা জ্যোতি বলেছেন তা অত্র আয়াতেই স্পষ্ট ।
নবীকে উক্ত আয়াতে যে মহান আল্লাহ গুণগত দিক থেকে নূর বা জ্যোতি বলেছেন তা অত্র আয়াতেই স্পষ্ট ।
৯,১ এরশাদ
হচ্ছে: ‘অতএব তোমরা আল্লাহ তাঁর রাসূল এবং অবতীর্ণ নূরের প্রতি ঈমান আনয়ন কর ।
তোমরা যা কর, সে বিষয়ে আল্লাহ সম্যক অবগত (সূরাহ আত্ তাগাবুন: ৮)
৯,২ অন্য সূরায় মহান আল্লাহ বলেনঃ ‘সুতরাং যারা তাঁর (মুহাম্মাদ এর) উপর ঈমান এনেছে, তাঁকে সম্মান করেছে, সাহায্য করেছে এবং তার উপর যে নূর অবতীর্ণ করা হয়েছে তার অনুসরণ করেছে তারাই হল প্রকৃত সফলকাম (সূরা আল্ আরাফ: ১৫৭)
উক্ত আয়াতদ্বয়ে আল্লাহ কুরআনকেও ‘নূর’ বলেছেন ।
৯,২ অন্য সূরায় মহান আল্লাহ বলেনঃ ‘সুতরাং যারা তাঁর (মুহাম্মাদ এর) উপর ঈমান এনেছে, তাঁকে সম্মান করেছে, সাহায্য করেছে এবং তার উপর যে নূর অবতীর্ণ করা হয়েছে তার অনুসরণ করেছে তারাই হল প্রকৃত সফলকাম (সূরা আল্ আরাফ: ১৫৭)
উক্ত আয়াতদ্বয়ে আল্লাহ কুরআনকেও ‘নূর’ বলেছেন ।
নূর
পার্টিরা কী বলবে কুরাআনও নূরের সৃষ্টি!
অথচ
কুরআন মহান আল্লাহর বাণী ইহাই সকল সুন্নী মুসলিমদের বিশ্বাস ।
কুরআনকে সৃষ্টবস্তু জ্ঞান
করা স্পষ্ট কুফরী,
অতএব,
কুরআনকে নূর বলার পরও যদি নূরের সৃষ্টি না বলা হয়,
তবে রাসূলকে নূরের সৃষ্টি
কোন্ যুক্তিতে বলা হবে ?
কারণ
মহান আল্লাহ নবীকে যেমন ‘নূর’ বলেছেন, ঠিক তেমনিভাবে পবিত্র আল কুরআনকেও ‘নূর’
বলেছেন ।
১০) প্রশ্ন করতে পারেন যে, আপনি
বলেছেন নবী সা. মাটির তৈরী । অথচ, রাসূল সা. তার এক হাদিছে বলেন যে,
১০,১ আল্লাহ সর্বপ্রথম আমার নূর সৃষ্টি করেছেন । এর জবাব কী ?
এ উত্তরটা একটি হাদিছ দিয়ে-ই
দেই । আল্লাহর রাসূল সা. অন্য হাদিছে বলেন যে,
১০,২ আল্লাহ সর্বপ্রথম আমার রূহ সৃষ্টি করেন । ঐ হাদিছ এবং এই হাদিছের মর্ম
একই ।
অর্থাৎ আল্লাহর রাসূলের রুহ মোবারক নূরের তৈরী, সমস্ত
শরীর নয় ।
কেননা মহানবী সা. এর রূহ বা
পবিত্র আত্না মাটির তৈরী হবে তো দূরের কথা, কোন মানুষের আত্নাই মাটির তৈরী নয় । বরং সমস্ত মানুষের আত্নাই নূরের
তৈরী ।
(৩য় চলবে)
“নবী (সাঃ) কে আল্লাহ মাটির তৈরী আদম (আঃ) থেকে স্বাভাবিক মানুষের যে নিয়ম আল্লাহ করেছেন সে পদ্ধতিতেই আবদুল্লাহর ওরসে মা আমিনার গর্ভে এ পৃথিবীতে আগমন ঘটিয়েছেন।” এই বক্তব্যের স্বপক্ষে আপনার কোন দলীল আছে কি?
উত্তরমুছুনসাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এবং পূর্ববর্তী আম্বিয়া আলাইহিমুস সালাম উনারা কেউই সাধারণ মানুষের মতো আগমন করেননি। যেহেতু হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা মহান আল্লাহ পাক উনার খাছ ও বিশেষভাবে মনোনীত বান্দা। তাই মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত নবী ও রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে উনার শান-মান হেতু স্বীয় কুদরত মুবারক দ্বারা আলাদাভাবে সৃষ্টি করেছেন।
এ প্রসঙ্গে কিতাবে বর্ণিত হয়েছে, জেনে রাখুন! সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফ বা আগমনের পদ্ধতি সম্পর্কে চারটি ক্বওল শরীফ রয়েছে।
১. হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার হযরত আম্মাজান আলাইহাস সালাম উনার বাম পার্শ্বের পাঁজর মুবারক-এর নিচ দিয়ে কুদরতীভাবে আগমন করেছেন।
২. স্বাভাবিক স্থান ও নাভির মধ্যবর্তী স্থান মুবারক হতে।
৩. স্বীয় মাতা আলাইহাস সালাম উনার মুখ মুবারক হতে।
৪. স্বাভাবিকভাবে।
আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফ সম্পর্কে আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের সকল ইমাম-মুজতাহিদ ও আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের অভিমত হলো, “হযরত আম্বিয়া আলাইহিমুস সালাম উনারা ব্যতীত সমস্ত মানুষই স্বাভাবিকভাবে জন্মগ্রহণ করেন। আর সমস্ত হযরত আম্বিয়া আলাইহিমুস সালাম উনারা স্বাভাবিক স্থান ও নাভির মধ্যবর্তী স্থান হতে কুদরতীভাবে আগমন করেছেন। আর আমাদের নবী সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার আম্মাজান আলাইহাস সালাম উনার বাম পার্শ্বের পাঁজর মুবারক-এর নিচ থেকে কুদরতীভাবে আগমন করেছেন।” (উমদাতুন নুকুল ফি কাইফিয়াতি বিলাদাতির রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ও সমস্ত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা সাধারণ মানুষের মতো আগমন করেননি। বরং মহান আল্লাহ পাক তিনি উনাদেরকে খাছ কুদরতীভাবে সৃষ্টি করেছেন। এ সম্পর্কে কিতাবে আরো বর্ণিত আছে যে, “হযরত আম্বিয়া আলাইহিমুস সালাম উনারা স্বাভাবিক পথে আগমন করেছেন, একথা সম্পূর্ণরূপেই অশুদ্ধ।”
“মালিকী মাযহাবের ইমাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা এজন্যই ওই ব্যক্তিকে ক্বতল করার ফতওয়া দিয়েছেন যে ব্যক্তি বলবে যে, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি স্বাভাবিকভাবে আগমন করেছেন।” (উমদাতুন নুকুল ফি কাইফিয়াতি বিলাদাতির রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
আমাদের আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের আক্বীদা হলো- হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার হযরত আম্মাজান আলাইহাস সালাম উনার রেহেম শরীফ হতে সাধারণ মানুষের ন্যায় আগমন করেননি। বরং তিনি উনার হযরত আম্মাজান আলাইহাস সালাম উনার বাম পার্শ্বের পাঁজর মুবারক-এর নিচ থেকে কুদরতীভাবে আগমন করেছেন। যা উনার বেমেছাল ত্বহারাত বা পবিত্রতার বহিঃপ্রকাশ ও বেমেছাল মর্যাদার মধ্যে একটি বিশেষ মর্যাদা।
নবী (সাঃ) এর পিতার নাম আব্দুল্লাহ মাতার নাম আমিনা এ কথার দলিল না পেলে আপনি একজন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পরে বা ৫ম শ্রেণির একজন বাচ্ছা কে প্রশ্ন করুন যে, রাসুল (সাঃ) এর কি পিতা মাতা ছিল এবং নাম কি ?
মুছুনস্বাভাবিক মানুষের যে নিয়ম-এর মানে মানুষ মাতা পিতার মিলনে মাতৃগর্ভে যে ধাপ আল্লাহ কুরআনে বর্ণনা করেছেন (বিস্তারিত দেখুন ১ম অংশের ১,৭ ও ১,৮) তাকে বুঝায় ।
আর স্বাভাবিক মানুষ হল-যার দৈহিক গঠন পরিপূর্ণ থাকে । তার কোন অংগ প্রত্যঙ্গ কম বেশী থাকে না ।
এ অর্থে রাসুল (সাঃ) স্বাভাবিক মানূষের যে নিয়ম সে ভাবেই পৃথিতে আগমন করেছেন ।
আর আমি এক নির্দিষ্ট কালের জন্যে মাতৃগর্ভে যা ইচ্ছা রেখে দেই(দেখুন ১,৮)
আল্লাহ পাকের যা ইচ্ছা মাতৃগর্ভে রেখে দেন, কি রাখেন, কিভাবে রাখেন এটা তিনিই ভাল জানেন ।
আপনি যে অপূর্ণাঙ্গ দলিল উল্লেখ করলেন ঐ সমস্ত বিশেষজ্ঞ কিভাবে দেখলেন, কিভাবে জানলেন ?
আম্মাজান আলাইহাস সালাম হল কিভাবে ?
মুছুনসাইয়্যিদুল আউয়ালীন ওয়াল আখিরীন, হামিলু লিওয়ায়িল হামদ্, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার যমীনে আগমন পদ্ধতির ভিন্নতা সম্পর্কে হাদীছ শরীফ-এ বর্ণিত আছে-
মুছুনعن ابى الجعفاء رضى الله تعالى عنه قال قال النبى صلى الله عليه وسلم رأت امى حين وضعتنى يسطع منها نور اضائت له قصور الشام
অর্থ : “হযরত আবুল জা’ফা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, যখন আমি যমীনে আগমন করি, তখন আমার আম্মাজান আলাইহাস সালাম তিনি দেখলেন যে, একখণ্ড নূর উনার শরীর মুবারক থেকে বের হয়ে শাম দেশের রাজপ্রাসাদ পর্যন্ত সমস্ত কিছুকেই আলোকিত করে ফেলেছেন।” (কানযুল উম্মাল ৩১৮২৮, ইবনে সা’দ)
অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সৃষ্টির শুরু থেকে হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনাকে সৃষ্টির পূর্ব পর্যন্ত মহান আল্লাহ পাক উনার কুদরতের মধ্যে কোটি কোটি বছর যাবত নূর হিসেবেই ছিলেন। এমনকি হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনার থেকে শুরু করে হযরত আব্দুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার পর্যন্তও সরাসরি নূর হিসেবেই স্থানান্তরিত হয়েছেন। এমনকি যমীনে তাশরীফ আনার সময়ও নূর হিসেবে তাশরীফ এনেছেন।
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন্ নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি দুনিয়াতে তাশরীফ আনার পদ্ধতিও সাধারণ মানুষের মত নয়। বরং তিনি নূরে মুজাসসাম ও রহমতুল্লিল আলামীন হওয়ার কারণে সম্পূর্ন ব্যতিক্রমধর্মী পদ্ধতিতে যমীনে তাশরীফ এনেছেন। অর্থাৎ তিনি হযরত আমিনা আলাইহাস সালাম উনার বাম পাঁজর মুবারক-এর নিচ থেকে কুদরতীভাবে তাশরীফ আনেন। অর্থাৎ নূর বা রহমত একস্থান হতে অন্যস্থানে স্থানান্তরিত হওয়ার জন্য যেমন কোন রাস্তা, পথ বা নালা ইত্যাদি কোন মাধ্যম প্রয়োজন হয়না, তেমনিভাবে তিনি সরাসরি নূর ও রহমত হওয়ার কারণে কোন রাস্তা বা নালা ছাড়াই সম্পূর্ণ কুদরতীভাবে উনার আম্মাজান আলাইহাস সালাম উনার বাম পাঁজর মুবারক-এর নীচ থেকে ব্যতিক্রমধর্মীভাবে যমীনে তাশরীফ এনেছেন।
উল্লেখ্য যে, অনেকে বলে থাকে, “সমস্ত মানুষ মায়ের রেহেম শরীফ হতে যেভাবে আগমন করে থাকে, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনিও সেভাবে আগমন করেছেন।” নাঊযুবিল্লাহ!
তাদের একথা সম্পূর্ণ ভুল। তাদের বক্তব্য ভুল হওয়ার সবচাইতে বড় কারণ হলো তারা একটি হাদীছ শরীফ-এ বর্ণিত فرج শব্দের একাধিক শাব্দিক অর্থ থেকে একটি অর্থের উপর ভিত্তি করেই বক্তব্য পেশ করেছে। অর্থটি হচ্ছে “শরমগাহ”।
অথচ فرج শব্দটির এ অর্থ ব্যতীত আরো অর্থের বর্ণনা পাওয়া যায় বিভিন্ন লুগাত বা অভিধানে, তাহলো- ছিদ্র, ফাঁক, ফাটল, প্রবেশ পথ, সুড়ঙ্গ, দু’হাত কিংবা দু’পায়ের মধ্যেবর্তী স্থান, দু’জিনিসের মাঝে ব্যবধান সৃষ্টিকারী বস্তু, পুরুষ-মহিলা, যুবক প্রত্যেকের শরমগাহ্ এবং তার চতুর্দিকের স্থান ও সন্তান মায়ের রেহেম শরীফ হতে যে স্থান দিয়ে ভুমিষ্ঠ হয় ইত্যাদি। অর্থাৎ এক কথায় فرج শব্দের অর্থ হলো ঐ রাস্তা যে রাস্তা দিয়ে সন্তান ভুমিষ্ঠ হয়, তা প্রত্যেক মায়ের শরীরের যেকোন স্থান দিয়েই হোক। فرج শব্দটি সকলের ক্ষেত্রে এক অর্থ প্রদান করবেনা। যেমন সাধারণ মানুষের ক্ষেত্রে যখন فرج শব্দটি ব্যবহার হবে, তখন এর অর্থ হবে সাধারণ ও স্বাভাবিক স্থান। আর অন্যান্য নবী-রসূল আলাইহিমুস্ সালামগণের শানে যখন এ শব্দ ব্যবহার হবে, তখন এর অর্থ হবে নাভী ও স্বাভাবিক স্থানের মধ্যবর্তী মুবারক স্থান। আর যখন আখিরী রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শানে এ শব্দ ব্যবহার হবে, তখন এর অর্থ হবে বাম পাঁজরের নিচের মুবারক স্থান। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন্ নাবিয়্যীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যমীনে তাশরীফ আনা সম্পর্কে কিতাবে চারটি মত বর্ণিত হয়েছে। যেমন: এ প্রসঙ্গে কিতাবে বর্ণিত হয়েছে, “জেনে রাখ সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন্ নাবিয়্যীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যমীনে আগমন করার স্থান সম্পর্কে চারটি ক্বওল রয়েছে। (১) হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি (স্বীয় মাতার) বাম পার্শ্বের মুবারক পাঁজর-এর নিচ থেকে ভুমিষ্ঠ হয়েছেন। (২) স্বাভাবিক স্থান ও নাভী মুবারক-এর মধ্যবর্তী মুবারক স্থান হতে। (৩) উনার মাতা হযরত আমিনা আলাইহাস্ সালাম উনার মুখ মুবারক থেকে। (৪) স্বাভাবিকভাবে।” তবে ইজমা ও ফতওয়া হলো প্রথম মতের উপর। কেননা ইহাই মশহুর ও মুতাবার।
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আগমন সম্পর্কে আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের সকল ইমাম-মুজতাহিদ ও আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের অভিমত হলো, “হযরত আম্বিয়া আলাইহিমুস সালাম উনারা ব্যতীত সমস্ত মানুষই সাধারণভাবে স্বাভাবিক পথে যমীনে আগমন করে। আর সমস্ত আম্বিয়া আলাইহিমুস সালাম উনারা স্বাভাবিক স্থানের উপর ও নাভীর নিচ থেকে আগমন করেছেন। আর আমাদের নবী সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হযরত আমিনা আলাইহাস সালাম উনার বাম পার্শ্বের পাঁজরের নিচ থেকে আগমন করেছেন।” (উমদাতুন্ নুকুল ফি কাইফিয়াতে বিলাদাতির রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
মুছুনউপরোক্ত আলোচনা থেকে প্রমাণিত হলো যে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন্ নাবিয়্যীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং সমস্ত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা সাধারণ মানুষের মতো আগমন করেননি। বরং মহান আল্লাহ পাক তিনি উনাদেরকে খাছ কুদরতীভাবে আগমন করিয়েছেন। এ সম্পর্কে আরো বর্ণিত আছে যে, “হযরত আম্বিয়া আলাইহিমুস সালাম উনারা স্বাভাবিক পথে যমীনে আগমন করেছেন একথা সম্পূর্ণরূপেই অশুদ্ধ। আর এজন্যই মালিকী মায্হাবের ইমামগণ ঐ ব্যক্তিকে কতল করার ফতওয়া দিয়েছেন, যে ব্যক্তি বলবে যে, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি স্বাভাবিক পথে যমীনে আগমন করেছেন।” (উমদাতুন্ নুকুল ফি কাইফিয়াতি বিলাদাতির রসূল)
উল্লেখ্য, বর্তমানে আমরা দেখতে পাই যে, সন্তান যখন স্বাভাবিক রীতি অনুযায়ী ভুমিষ্ট হওয়া অসম্ভব হয়ে পড়ে, তখন সে সন্তানকে অপারেশন করে মায়ের রেহেম থেকে বের করে আনতে হয়। এ অবস্থায় নাভীর নিচে ও স্বাভাবিক পথের উপরে অপারেশন করতে হয়। অর্থাৎ এ অবস্থায়ও সাধারণ মানুষ স্বাভাবিক পথ দিয়ে আগমন করে না।
অতএব, এ বিষয়ে সকলকেই আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের আক্বীদা মুতাবিক আক্বীদা পোষণ করতে হবে। আর তাহলো, হযরত আম্বিয়া আলাইহিমুস সালাম উনারা ব্যতীত সমস্ত মানুষই স্বাভাবিক পথে যমীনে আগমন করে। আর সমস্ত আম্বিয়া আলাইহিমুস সালাম উনারা স্বাভাবিক পথের উপর ও নাভীর নিচ থেকে তাশরীফ এনেছেন। আর আমাদের নবী সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আম্মাজান হযরত আমিনা আলাইহাস সালাম উনার বাম পার্শ্বের পাঁজরের নিচ থেকে আগমন করেছেন। সুতরাং এর খিলাফ আক্বীদা পোষণ করার অর্থ হলো মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ইহানত করা যা কাট্টা কুফরীর অন্তর্ভুক্ত।
আগমন পদ্ধতির ভিন্নতার কারণে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দুনিয়াতে তাশরীফ আনার সময় দুনিয়ার কোন মহিলা সেখানে উপস্থিত ছিল না। বরং তখন হযরত আমিনা আলাইহাস সালাম উনার খিদমত করার জন্য মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত হাওয়া আলাইহাস সালাম, হযরত হাজেরা আলাইহাস সালাম, হযরত মরিয়ম আলাইহাস সালাম ও হযরত আছিয়া আলাইহাস সালাম উনাদেরকে প্রেরণ করেন, উনারা প্রত্যেকেই নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের আগমনের ভিন্নতা সম্পর্কে জ্ঞাত ছিলেন। (আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম ফী মাওলিদি সাইয়্যিদি বুলদি আদাম)
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আব্বাজান আলাইহিস সালাস ও আম্মাজান আলাইহাস সালাম উনারা ফিতরাত যুগের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন ও উনারা দ্বীনে হানীফার উপর কায়িম ছিলেন। সাইয়্যিদুল মুরসালনি, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আনুষ্ঠানিকভাবে নুবুওওয়াত প্রকাশের বহু পূর্বে এবং হযরত ঈসা রূহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার থেকে প্রায় ৫০০ বছর পরে উনার আব্বাজান আলাইহিস সালাম ও আম্মাজান আলাইহাস সালাম উনারা উভয়েই মহান আল্লাহ পাক উনার দীদার মুবারক-এ চলে যান।
মুছুনযাঁরা কোন নবী আলাইহিস সালাম উনার আমল পাননি, যাঁদের নিকট ইসলামের দাওয়াত পৌঁছায়নি এবং যাঁরা দুই নবী আলাইহিমুস সালাম উনাদের অন্তবর্তীকালীন সময়ে ইন্তিকাল করেন- এ সময়টাকে বলা হয় ফিতরাত যুগ।
এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন,
وَلَوْلَا أَن تُصِيبَهُم مُّصِيبَةٌ بِمَا قَدَّمَتْ أَيْدِيهِمْ فَيَقُولُوا رَبَّنَا لَوْلَا أَرْسَلْتَ إِلَيْنَا رَسُولًا فَنَتَّبِعَ آيَاتِكَ وَنَكُونَ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ
অর্থ : “যারা ফিতরাত যুগের তাদের কৃতকর্মের জন্য যখনই কোন মুছীবত আসত তখন তারা বলত, মহান আল্লাহ পাক তিনি কেন কোন রসূল আলাইহিস সালাম উনাকে প্রেরণ করেননি, আমরা উনার আয়াত শরীফ-এর অনুসরণ করতাম এবং ঈমানদার হতাম।” (সূরা ক্বাছাছ : ৪৭)
এ প্রসঙ্গে আরো উল্লেখ্য যে, হযরত ইমাম নববী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি মুশরিকদের সন্তান-সন্ততি সম্পর্কে বলেছেন, তারা জান্নাতবাসী। কেননা পবিত্র কারামুল্লাহ শরীফ-এর ঘোষণানুযায়ী প্রাপ্ত বয়স্কদের মধ্যে যাদের নিকট ইসলামের দাওয়াত পৌঁছেনি তাদেরকে শাস্তি দেয়া হবে না। (যদি কুফরী ও শিরকী না করে থাকে) আর যাদের নিকট ইসলামের দাওয়াত পৌঁছেছে, অথচ কুফরী ও শিরকী পরিত্যাগ করেনি তারা অবশ্যই জাহান্নামী। এতে কারো দ্বিমত নেই।
সুতরাং দুই নবী আলাইহিমুস সালাম উনাদের অন্তবর্তীকালীন সময়ে মৃত বা ইন্তিকালকারী উনারা আহলে ফিতরাত বিধায় তাদের হুকুম ব্যতিক্রম। অর্থাৎ উনারা যদি শুধু কুফরী ও শিরকী থেকে মুক্ত থাকেন তাহলে উনারা আযাব বা শাস্তি থেকেও মুক্ত থাকবেন। (মাসালিকুল হুসাফা লিস সুয়ূতী)
যেমন ছিলেন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আব্বাজান আলাইহিস সালাম ও আম্মাজান আলাইহাস সালাম উনারা। উনারা কোন প্রকার কুফরী-শিরকী করেননি। অর্থাৎ উনারা উভয়েই দ্বীনে হানীফে কায়িম ছিলেন। উনারা কখনও তাওহীদ বিরোধী কোন আমল করেছেন এমন কোন প্রমাণ মহান আল্লাহ পাক উনার যমীনে কেউই পেশ করতে পারবে না। এ বিষয়ে সমস্ত ইমাম-মুজতাহিদ রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা একমত পোষণ করেন।
হাদীছ শরীফ-এর কিতাব “ত্ববারানী শরীফ”-এ উল্লেখ আছে, নি¤œবর্ণিত ব্যক্তি উনারা মহান আল্লাহ পাক উনার একত্বে বিশ্বাসী ছিলেন এবং উনারা পাক-নাপাকীরও বিশ্বাসী ছিলেন। যদি উনাদের কেউ নাপাক হতেন, তাহলে অযূ-গোছল করে পবিত্র হতেন। এমনকি উনারা হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম উনার দ্বীনে বিশ্বাসী হয়ে আমল করতেন। উনাদের নাম মুবারক হলো-
(১) হযরত আব্দুল্লাহ আলাইহিস সালাম, (২) হযরত আমিনা আলাইহাস সালাম, (৩) হযরত আসওয়াদ বিন সারারা বিন মায়রুর আনসারী, (৪) হযরত মুহম্মদ বিন মাসলাম ও (৫) হযরত আবূ কাইস বিন সারমা।
‘তাহক্বীকুল মাক্বাম আলা কিফাইয়াতিল আওয়াম’ কিতাবে উল্লেখ রয়েছে যে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন-
মুছুনلَمْ اَزَلْ اَنْقُلُ مِنْ اَصْلاَبِ الطَّاهِرِيْنَ اِلىٰ اَرْحَامِ الطَّاهِرَاتِ عَلىٰ اَنَّ جَمِيْعَ اٰبَآئِهِ صَلَّ اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَاُمَّهَاتِهِۤ اِلىٰ اٰدَمَ وَحَوَّاءَ عَلَيْهِمَا السَّلاَمُ لَيْسَ فِيْهِمْ كَافِرٌ.
অর্থ: “আমি সবসময় পবিত্র পুরুষ উনাদের পৃষ্ঠ মুবারক থেকে এবং পবিত্রা নারী উনাদের রেহেম শরীফ-এ স্থানান্তরিত হয়েছি। আমার পূর্ববর্তী যত পুরুষ ও মহিলা উনারা হযরত আদম আলাইহিস সালাম ও হযরত হাওয়া আলাইহাস সালাম উনাদের পর্যন্ত অতীত হয়েছেন, উনাদের কেউই কাফির ছিলেন না। ”
এ পবিত্র হাদীছ শরীফ দ্বারা অধিকাংশ ইমাম মুজতাহিদ ও হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা দলীল পেশ করেছেন যে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত পিতা ও পিতামহ আলাইহিমুস সালাম উনারা এবং সম্মানিতা মাতা ও মাতামহ আলাইহিন্নাস সালাম উনারা হযরত আদম আলাইহিস সালাম ও হযরত হাওয়া আলাইহাস সালাম পর্যন্ত কেউই কাফির-মুশরিক, পথভ্রষ্ট ছিলেন না। উনারা কেউ ছিলেন হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম। আর অবশিষ্টগণ উনারা ছিলেন স্ব স্ব যুগের লক্ষ্যস্থল ও খাঁটি ঈমানদার।
উপরোক্ত হাদীছ শরীফ-এ الطاهر ‘ত্বহারাত’ লফয বা শব্দের উল্লেখ রয়েছে। الطاهر ‘ত্বহারাত’ শুধুমাত্র যারা মু’মিন, মুত্তাক্বীন ও নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। কাফির-মুশরিক, বেদ্বীন-বদদ্বীনদের ক্ষেত্রে الطاهر ত্বহারাত প্রযোজ্য নয়। যেমন মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন,
إِنَّمَا الْمُشْرِكُونَ نَجَسٌ
অর্থ : “নিশ্চয়ই মুশরিকরা নাপাক।” (সূরা তওবা : ২৮)
মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ করেন,
وَلَأَمَةٌ مُّؤْمِنَةٌ خَيْرٌ مِّن مُّشْرِكَةٍ
অর্থ : “নিশ্চয়ই মুমিনা দাসী মুশরিকা (স্বাধীনা) মহিলা হতে উত্তম।” (সূরা বাক্বারা : ২২১)
وَلَعَبْدٌ مُّؤْمِنٌ خَيْرٌ مِّن مُّشْرِكٍ
অর্থ : “নিশ্চয়ই মুমিন দাস মুশরিক (স্বাধীনা) পুরুষ হতে উত্তম।” (সূরা বাক্বারা : ২২১)
উপরোক্ত আয়াত শরীফ হতে এটাই প্রমাণিত হয় যে, মুশরিক ও কাফিররা কখনও উত্তম হতে পারে না, কারণ তারা নাপাক। তাই সাধারণ মু’মিন ও মু’মিনাও তাদের থেকে উত্তম।
হাদীছ শরীফে ইরশাদ হয়েছে,
উত্তরমুছুনعَنْ حَضَرَتْ مُطَرَّفِ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ الشِّخِّيْرِ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كُنْتُ نَبِيًّا بَيْنَ الرُّوْحِ وَالطِّيْنِ مِنْ اٰدَمَ
অর্থ : “হযরত মুতররফ বিন আব্দুল্লাহ্ ইবনিশ শিখখির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, “আমি তখনো নবী, যখন হযরত আদম আলাইহিস সালাম তিনি রূহ ও মাটিতে ছিলেন।” (ইবনে সা’দ, কানযুল উম্মাল)
হাদীছ শরীফে আরো ইরশাদ হয়েছে,
عَنْ حَضَرَتْ مَيْسَرَةِ الْفَجْرِ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كُنْتُ نَبِيًّا وَاٰدَمُ بَيْنَ الرُّوْحِ وَالْجَسَدِ
অর্থ : “হযরত মাইসারাতুল ফজর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, “আমি তখনো নবী ছিলাম, যখন হযরত আদম আলাইহিস সালাম তিনি রূহ ও শরীরে ছিলেন।” (তারিখে বুখারী, আহমদ, আলহাবী, ইত্তেহাফুচ্ছাদাত, তাযকিরাতুল মাউজুয়াত, কানযুল উম্মাল, দাইলামী, ত্ববরানী, আবু নাঈম, মিশকাত, মিরকাত)
হাদীছ শরীফে আরো ইরশাদ হয়েছে,
كُنْتُ نَبِيًّا وَاٰدَمُ بَيْنَ الْمَاءِ وَالطِّيْنِ
অর্থ : “আমি তখনো নবী ছিলাম, যখন হযরত আদম আলাইহিস সালাম তিনি পানি ও মাটিতে ছিলেন।” (মিশকাত শরীফ, মিরকাত শরীফ)
হাদীছ শরীফে আরো ইরশাদ হয়েছে,
كُنْتُ نَبِيًّا وَلاَمَاءٌ وَّلاَطِيْنٌ
অর্থ : “আমি তখনো নবী ছিলাম, যখন পানিও ছিলো না এবং মাটিও ছিলো না।” (মিরকাত শরীফ)
হাদীছ শরীফে আরো ইরশাদ হয়েছে,
عَنْ حَضَرَتْ اَبِىْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ قَالُوْا يَا رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَتىٰ وَجَبَتْ لَكَ النُّبُوَّةُ قَالَ وَاٰدَمُ بَيْنَ الرُّوْحِ وَالْجَسَدِ
অর্থঃ- “হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা জিজ্ঞাসা করলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনাকে কখন নুবুওওয়ত দেয়া হয়েছে? (অর্থাৎ আপনি কখন থেকে নবী?) তিনি বললেন, আমি তখনো নবী ছিলাম যখন হযরত আদম আলাইহিস্ সালাম তিনি রূহে এবং শরীরে অবস্থান করছিলেন (অর্থাৎ হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনার সৃষ্টির পূর্ব থেকেই আমি নবী)।” (তিরমিযী শরীফ, মিশকাত শরীফ)
عَنْ حَضَرَتْ اَلْعِرْبَاضِ بْنِ سَارِيَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ عَنْ رَّسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَنَّه قَالَ اَنِّىْ عِنْدَ اللهِ مَكَتُوْبٌ خَاتَمُ النَّبِيِّيْنَ وَاِنَّ اٰدَمَ لَمُنْجَدِلٌ فِىْ طِيْنَتِه وَسَاُخْبِرُكُمْ بِاَوَّلِ اَمْرِىْ دَعْوَةُ اِبْرَاهِيْمَ وَبَشَاَرَةُ عِيْسٰ وَرُؤْيَا اُمِّىَ الَّتِىْ رَاَتْ حِيْنَ وَضَعَتْنِىْ وَقَدْ خَرَجَ لَهَا نُوْرٌ اَضَاءَ لَهَا مِنْهُ قُصُوْرُ الشَّمِ
অর্থঃ- “হযরত ইরবায ইবনে সারিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। হযরত রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, নিশ্চয়ই আমি মহান আল্লাহ পাক উনার নিকটে তখনও ‘খাতামুন্ নাবিয়্যীন’ রূপে লিপিবদ্ধ ছিলাম যখন হযরত আদম আলাইহিস সালাম তিনি ছিলেন মাটির খামিরের মধ্যে। আমি তোমাদের আরো জানাচ্ছি যে, আমার নুবুওওয়াতের প্রথম প্রকাশ হলো হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম উনার দু’য়া এবং হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম উনার ভবিষ্যত সুসংবাদ, আর আমার আম্মাজান আলাইহাস সালাম উনার প্রত্যক্ষ স্বপ্ন, যা তিনি আমার আগমনকালে দেখেছিলেন যে, উনার সম্মুখে একটি নূর উদ্ভাসিত হয়েছে যাঁর রৌশনীতে তিনি সিরিয়ার রাজপ্রাসাদ পর্যন্ত দেখতে পান।” (শরহুস্ সুন্নাহ, মুসনাদে আহমদ শরীফ, মিশকাত শরীফ)
মহান আল্লাহ পাক তিনি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনাকে সৃষ্টি করার পূর্বেই নবী হিসেবে সৃষ্টি করেছেন।
কাজেই, যখন প্রমাণিত হলো যে, মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সৃষ্টির শুরু থেকেই নবী, রসূল ও হাবীব।
তাহলে আপনার নিকট প্রশ্ন পিতার পূর্বে সন্তান কিভাবে সৃষ্টি হলেন?
আপনার উল্লেখিত অপূর্ণাঙ্গ দলিলগুলো কি সহিহ ? এ ব্যাপারে হাদিস বিশারদ গণ কি বলেছেন ?
মুছুনআপনি কি জানেন রুহ জগত সম্পর্কে ! সকল জীবের রুহ কি আল্লাহ পৃথিবীতে পাঠানোর পূর্বেই সৃষ্টি করে রাখেন নাই !
উপরের দলিল আপনার দৃষ্টীতে সহিহ হলে ধারনা করুন এটা রাসুল (সাঃ) এর রুহ সম্পর্কে বলা হয়েছে । এই অর্থে সকল কিছুর আগে রাসুল (সাঃ) এর রুহ সৃষ্টি হয়েছে (দেখুন ৩য় অংশের ১০,২)
(রুহ) সৃষ্টি হলেও পিতার আগে সন্তান পৃথিবীতে আসে না, পরে আসে !!!
আপনি অপূর্ণাঙ্গ জ্ঞান নিয়ে একটি আক্বীদার বিষয় কথা বলছেন কিভাবে? আপনার এ জ্ঞানটুকুও নেই যে উপরোক্ত হাদীছ শরীফগুলো ছহীহ কিনা? আর আপনার মতের পক্ষে যায়নি বলেই অপূর্ণাঙ্গ দলিল বলছেন নিশ্চয়ই।
মুছুনমহান আল্লাহ পাত তিনি রুহ সম্পর্কে ইরশাদ করেন,
وَيَسْأَلُونَكَ عَنِ الرُّوحِ ۖ قُلِ الرُّوحُ مِنْ أَمْرِ رَبِّي وَمَا أُوتِيتُم مِّنَ الْعِلْمِ إِلَّا قَلِيلًا
অর্থ : “তারা আপনাকে রুহ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে। আপনি বলে দিন, রুহ হচ্ছে আমার পালনকর্তার আদেশ। এ বিষয়ে তোমাদেরকে অল্প জ্ঞান ব্যতীত দেয়া হয়নি। (সূরা বণী ইসরাঈল : ৮৫)
দলীল আমার দৃষ্টিতে ছহীহ হওয়া না হওয়ার ব্যাপারে স্বীকৃতি দেয়ার আমি কেউ নই বরং হাদীছ শরীফগুলো হযরত মুহাদ্দিছিনে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা ছহীহ হিসেবেই কিতাবে লিপিবদ্ধ করেছেন।
আর ইসলামে ধারণার কোন অবকাশ নেই। প্রত্যেকটি বিষয়ই সুনিশ্চত। তাই ধারণা করিনা যে, উপরোক্ত হাদীছ শরীফগুলো সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার রূহ মুবারক সম্পর্কে বলা হয়েছে বরং হাদীছ শরীফ দ্বারাই প্রমাণিত উনার অজুত বা অস্তিত্ব মুবারক নূরে সৃষ্টি। আর উনার অজুত মুবারক হতে পরবর্তীতে সমস্ত কিছু সৃষ্টি।
“আমি তখনো নবী ছিলাম, যখন হযরত আদম আলাইহিস সালাম তিনি রূহ ও শরীরে ছিলেন।”
উত্তরমুছুনএই হাদীছ শরীফ হতে বোঝা যাচ্ছে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনার শরীর মুবারক-এ রূহ মুবারক ফুঁকে দেয়ারও পূর্ব হতে নবী। এমনকি শরীর মুবারক যখন সৃষ্টিও হয়নি তখনও নবী। যেমন-
“আমি তখনো নবী, যখন হযরত আদম আলাইহিস সালাম তিনি রূহ ও মাটিতে ছিলেন।”
“আমি তখনো নবী ছিলাম, যখন হযরত আদম আলাইহিস সালাম তিনি পানি ও মাটিতে ছিলেন।”
আরো স্পষ্ট করে বললে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তখনও নবী যখন পানি ও মাটিও সৃষ্টি হয়নি। যেমন- “আমি তখনো নবী ছিলাম, যখন পানিও ছিলো না এবং মাটিও ছিলো না।”
মাটিও যখন সৃষ্টি হয়নি তার পূর্বে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সৃষ্টি হয়েছেন। তাহলে আপনার কাছে প্রশ্ন তিনি তাহলে কি করে মাটির তৈরী হতে পারেন?
সকল কিছু আগে রাসুল (সাঃ) রুহ সৃষ্টি হয়েছে (দেখুন ৩য় অংশের ১০,২)রুহের জগত তিনি (সাঃ)তখনও নবী ছিলেন ।
মুছুনএর উত্তর আগে দিয়েছি । আপনি এক কমেন্টে লিখেছেন আদম (আঃ) ছাড়া কোন মানূষই সরাসরি মাটির তৈরী নয় ।
আমি লিখেছিলাম সরাসরি না হলেও সৃষ্টির ধারাবাহিকতায় মানূষ মাটির তৈরী (বিস্তারিত দেখুন ১ম অংশের ১,৭; ১,৮;১,১১;১,১২)
মহান আল্লাহ পাক তিনি সমস্ত কিছু সৃষ্টির পূর্বে উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অজুত বা অস্তিত্ব মুবারক সৃষ্টি করেছেন। তারপর সমস্ত কিছু সৃষ্টি করেছেন। যেমন-মালিকী মাযহাবের প্রতিষ্ঠাতা ও ইমাম হযরত ইমাম মালিক রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার শাগরেদ, হাম্বলী মাযহাবের প্রতিষ্ঠাতা ও ইমাম হযরত ইমাম আহমদ বিন হাম্বল রহমতুল্লাহি আলাইহি (মুসনাদে আহমদ-এর লেখক) উনার উস্তাদ এবং হযরত ইমাম বুখারী রহমতুল্লাহি আলাইহি ও হযরত ইমাম মুসলিম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাদের উস্তাদের উস্তাদ, বিখ্যাত মুহাদ্দিছ, হাফিজুল হাদীছ, আল্লামা আব্দুর রাজ্জাক রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বর্ণনা করেন,
মুছুনعن حضرت جابر رضى الله تعالى عنه قال قلت يا رسول الله بابى انت ومى اخبرنى عن اول شيىء خلق الله تعالى قبل الاشياء قال يا جابر ان الله تعالى قد خلق قبل الاشياء نور نبيك من نوره فجعل ذالك النور يدور بالقدرة حيث شاء الله تعالى ولم يكن فى ذالك الوقت لوح ولا قلم ولاجنة ولا نار ولا ملك ولاسماء ولا ارض ولشمس ولا قمر ولا جنى ولا انسى فلما اراد الله تعالى ان يخلق الخلق قسم ذالك النور اربعة فخلق من الجزء الاول القلم ومن الثنى اللوح ومن الثالث العرش ثم قسم الرابع اربعة اجزاء فخلق من الاول حملت العرش ومن الثانى الكرسى ومن الثالث باقى الملئكة ثم قسم الرابع اربعة اجزاء فخلق من الاول السماوات ومن الثانى الارضين ومن الثالث الجنة والنار ثم قسم الرابع اربعة اجزاء فخلق من الاول نور ابصار المؤمنين ومن الثانى نور قلوبهم وهى المعرفة بالله تعالى ومن الثالث نور انسهم وهو التوحيد لااله الا الله محمد رسول الله ...........
অর্থঃ- “হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বললাম, ইয়া রসূলাল্লাহ্ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমার পিতা-মাতা আপনার জন্য কুরবান হয়ে যাক, আপনি আমাকে জানিয়ে দিন যে, মহান আল্লাহ পাক তিনি সর্বপ্রথম কোন জিনিস সৃষ্টি করেছেন? তিনি বললেন, হে জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু! নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি সব কিছুর পূর্বে আপনার নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নূর মুবারককে সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর সেই নূর মুবারক মহান আল্লাহ পাক উনার ইচ্ছানুযায়ী কুদরতীভাবে ঘুরছিল। আর সে সময় লওহো, ক্বলম, বেহেশত, দোযখ, ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম, আসমান, যমীন, চন্দ্র, সূর্য, মানুষ ও জিন কিছুই ছিলনা। অতঃপর যখন মহান আল্লাহ পাক তিনি “মাখলুকাত” সৃষ্টি করার ইচ্ছা পোষণ করলেন। তখন সেই নূর মুবারক চার ভাগ করলেন। প্রথম ভাগ দ্বারা ‘ক্বলম’, দ্বিতীয় ভাগ দ্বারা ‘লওহে মাহফুজ’ তৃতীয় ভাগ দ্বারা ‘আরশে মুয়াল্লাহ’ সৃষ্টি করলেন। চতুর্থ ভাগকে আবার চারভাগ করেন প্রথম ভাগ দ্বারা ‘আরশ বহনকারী ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম’ দ্বিতীয় ভাগ দ্বারা ‘কুরসী’ আর তৃতীয় ভাগ দ্বারা অন্যান্য ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে সৃষ্টি করেন। অতঃপর এ চতুর্থ ভাগকে আবার চার ভাগ করেন। প্রথম ভাগ দ্বারা ‘আসমান’, দ্বিতীয় ভাগ দ্বারা ‘যমীন’ আর তৃতীয় ভাগ দ্বারা ‘বেহেশত ও দোযখ’ সৃষ্টি করেন। নূরের অবশিষ্ট এ চতুর্থ ভাগকে আবার চার ভাগ করেন, প্রথম ভাগ দ্বারা ‘মু’মিন বান্দাদের চোখের ‘জ্যোতি’, দ্বিতীয় ভাগ দ্বারা তাদের ক্বলবের জ্যোতি আর এটাই মূলতঃ মহান আল্লাহ তা’য়ালা উনার মা’রিফাত, আর তৃতীয় ভাগ দ্বারা মু’মিনদের উন্সের নূর অর্থাৎ তাওহীদ বা একত্বের নূর তথা কলেমার নূর সৃষ্টি করেন।” (মুসনাদে আব্দুর রাজ্জাক)
মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সৃষ্টির শুরু থেকে হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনাকে সৃষ্টির পূর্ব পর্যন্ত মহান আল্লাহ পাক উনার কুদরতের মধ্যে কোটি কোটি বছর যাবত নূর হিসেবেই ছিলেন। এমনকি হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনার থেকে শুরু করে হযরত আব্দুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার পর্যন্তও সরাসরি নূর হিসেবেই স্থানান্তরিত হয়েছেন। এমনকি যমীনে তাশরীফ আনার সময়ও নূর হিসেবে তাশরীফ এনেছেন। অর্থাৎ উনার অস্তিত্ব মুবারক আপাদমস্তক নূর।
মুছুনসাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন্নাবিয়্যীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যে, “নূরে মুজাসসাম” বা আপাদমস্তক নূর তার একটি উজ্জ্বল, সুস্পষ্ট ও অকাট্য দলীল হলো, “ছায়াহীন কায়া মুবারক।” কারণ অসংখ্য অনুসরনীয় ও বিখ্যাত ইমাম-মুজতাহিদ, মুহাদ্দিছ-ফক্বীহ ও ওলীআল্লাহ রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের মত এই যে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন নাবিইয়ীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দেহ মুবারক-এর কোন ‘ছায়া’ ছিলনা, কেননা তিনি ছিলেন আপাদমস্তক মুবারক ‘নূর’।
এ প্রসঙ্গে বিখ্যাত ও প্রসিদ্ধ মুহাদ্দিছ, হাদীছ শরীফ-এর কিতাব তিরমিযী শরীফ-এর লেখক আল্লামা হাকীম তিরমিযী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার “নাওয়াদেরুল উছূল” কিতাবে হাদীছ শরীফ বর্ণনা করেন,
ان رسول الله صلى الله عليه وسلم لم يكن يرى له ظل فى شمس والاقمر
অর্থ : “নিশ্চয়ই সূর্য ও চাঁদের আলোতেও সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন্নাবিয়্যীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার “ছায়া মুবারক” দেখা যেত না।”
ইমামুল মুহাদ্দিছীন, ফক্বীহুল মিল্লাত, আশিকে রসূল, আল্লামা হযরত মুল্লা আলী ক্বারী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি “জামিউল ওসায়িল ফি শরহি শামায়িল” কিতাবের ২১৭ পৃষ্ঠায় উল্লেখ করেছেন যে, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছায়া মুবারক ছিলনা। যেমন-
وفى حديث حضرت ابن عباس رضى الله تعالى عنه لم يكن لرسول الله صلى الله عليه وسلم ظل ولم يقع مع الشمس قط الا غلب ضوءه ضوءها ولم يقع مع سراج قط الا غلب ضوءه ضوءه.
অর্থ : “হাদীছ শরীফ-এ উল্লেখ আছে- হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কোন ছায়া মুবারক ছিল না। আর সূর্যের আলোতে কখনও উনার ছায়া মুবারক পড়তোনা।”
আরো বর্ণিত আছে- “উনার আলো সূর্যের আলোকে অতিক্রম করে যেত। আর বাতির আলোতেও কখনো উনার ছায়া মুবারক পড়তোনা। কেননা উনার আলো বাতির আলোকে ছাড়িয়ে যেতো।”
প্রখ্যাত আলিমে দ্বীন, শায়খুল উলামা, আল্লামা শায়খে ইব্রাহীম বেজরী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি “আল মাওয়াহিবুল লাদুন্নিয়া আলা শামায়িলে মুহম্মদিয়ার” ১০৫ পৃষ্ঠায় হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নূরের দেহ মুবারক সূর্যের আলোর চেয়েও অধিক মর্যাদা সম্পন্ন তা বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন-
وفى حديث حضرت ابن عباس رضى الله تعالى عنه لم يكن لرسول الله صلى الله عليه وسلم ظل ولم يقع مع الشمس قط الا غلب ضوءه ضوء الشمس ولم يقع مع سراج قط الا غلب ضوءه ضوء السراج-
অর্থঃ- “হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত আছে তিনি বলেন, আল্লাহ পাক উনার রাসূল সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছায়া মুবারক ছিলনা এবং সূর্যের আলোতেও কখনই উনার ছায়া মুবারক পড়তো না। কেননা উনার নূরের আলো সূর্যের আলোকেও অতিক্রম করে যেতো। আর বাতির আলোতেও কখনই উনার ছায়া মুবারক পড়তো না কেননা উনার আলো বাতির আলোর উপরেও প্রাধান্য লাভ করতো।”
দেওবন্দীদের মুরুব্বী মৌলুবী রশীদ আহমদ গাঙ্গুহী রচিত কিতাব “ইমদাদুস সুলূক” এর ৮৬ পৃষ্ঠায় লিখে,
بتواتر ثابت شد کہ انحضرت صلی اللہ علیہ وسلم سایہ نداشتند – وظاہر است کہ بجز نور ہمہ اجسام ظل می دارند-
অর্থঃ- “একথা মুতাওয়াতির বর্ণনা দ্বারা প্রমাণিত যে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দেহ মুবারকের “ছায়া” ছিলনা। প্রকাশ থাকে যে, নূরের দেহ ছাড়া সকল দেহেরই ছায়া রয়েছে।
দেওবন্দীদের মুরুব্বী আশরাফ আলী থানবী “শুকরুন নি’মাহ” নামক কিতাবের ৩৯ পৃষ্ঠায় লিখে,
یہ بات مشہور ہے کہ ہمارے حضور صلی اللہ علیہ وسلم کے سایہ نہیں تھا (اسلئے کہ) ہمارے حضور صلی اللہ علیہ وسلم سرتاپا نور ہی نور تھے.
অর্থঃ- “একথা প্রসিদ্ধ যে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন নাবিয়্যীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শরীর মুবারক-এর “ছায়া” ছিলনা, কেননা সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন নাবিয়্যীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আপাদমস্তক মুবারক ‘নূর’ তথা “নূরে মুজাসসাম।”
মহান আল্লাহ পাক তিনি কালামুল্লাহ শরীফ-এ ইরশাদ করেন,
উত্তরমুছুনإِذْ قَالَ رَبُّكَ لِلْمَلَائِكَةِ إِنِّي خَالِقٌ بَشَرًا مِن طِينٍ
অর্থ : “যখন আপনার পালনকর্তা ফেরেস্তাগণকে বললেন, আমি মাটির মানুষ সৃষ্টি করবো।” (সূরা ছোয়াদ : ৭১)
উপরোক্ত আয়াত শরীফ হতে জানা যাচ্ছে যে, মহান আল্লাহ পাক তিনি যখন মানুষ সৃষ্টি করতে চাইলেন তখন তিনি সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী হওয়া সত্ত্বেও হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের সাথে পরামর্শ করেন। উনার এ পরামর্শের কোন প্রয়োজন ছিল না শুধু মাত্র বান্দাদেরকে কাজের তরতীব শিক্ষা দেয়ার জন্যেই এ পরামর্শের অবতারনা করেন।
মহান আল্লাহ পাক তিনি যখন মানুষ সৃষ্টির এই পরামর্শ করছেন সেসময় বরং তারও পূর্বে মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অস্তিত্ববান অর্থাৎ তিনি সৃষ্টি হয়েছেন। মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার প্রতি ছলাত ও সালাম পাঠ করছেন।
তাহলে “নবী (সাঃ) সৃষ্টিগত দিক থেকে بشر তথা আমাদের মতই একজন মানুষ”- একথা বলা কি করে গ্রহণযোগ্য হতে পারে? কেননা বাশারের সৃষ্টি হয়েছে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সৃষ্টি করার বহু পরে।
মহান আল্লাহ পাক তিনি কালামুল্লাহ শরীফ-এ ইরশাদ করেন,
মুছুনإِذْ قَالَ رَبُّكَ لِلْمَلَائِكَةِ إِنِّي خَالِقٌ بَشَرًا مِن طِينٍ
অর্থ : “যখন আপনার পালনকর্তা ফেরেস্তাগণকে বললেন, আমি মাটির মানুষ সৃষ্টি করবো।” (সূরা ছোয়াদ : ৭১)
উপরোক্ত আয়াত শরীফ হতে জানা যাচ্ছে যে, মহান আল্লাহ পাক তিনি যখন মানুষ সৃষ্টি করতে চাইলেন তখন তিনি সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী হওয়া সত্ত্বেও হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের সাথে পরামর্শ করেন। উনার এ পরামর্শের কোন প্রয়োজন ছিল না শুধু মাত্র বান্দাদেরকে কাজের তরতীব শিক্ষা দেয়ার জন্যেই এ পরামর্শের অবতারনা করেন।
মহান আল্লাহ পাক তিনি যখন মানুষ সৃষ্টির এই পরামর্শ করছেন সেসময় বরং তারও পূর্বে মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অস্তিত্ববান অর্থাৎ তিনি সৃষ্টি হয়েছেন। মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার প্রতি ছলাত ও সালাম পাঠ করছেন।
তাহলে “নবী (সাঃ) সৃষ্টিগত দিক থেকে بشر তথা আমাদের মতই একজন মানুষ”- একথা বলা কি করে গ্রহণযোগ্য হতে পারে? কেননা বাশারের সৃষ্টি হয়েছে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সৃষ্টি করার বহু পরে।
অর্থাৎ তিনি সৃষ্টিগত দিক থেকে বাশার নন বরং বাশারের মাঝে মহান আল্লাহ পাক তিনি উনাতে পাঠিয়েছেন।
মহান আল্লাহ পাক তিনি কুরআন শরীফ-এর একাধিক স্থানে ইরশাদ করেন,
উত্তরমুছুনنُّوحِي إِلَيْهِم
অর্থ : “আমি উনাদের (হযরত আম্বিয়া আলাইহিস সালাম উনাদের) প্রতি ওহী পাঠাতাম।” (সূরা ইউসূফ : ১০৯, সূরা নাহল : ৪৩, সূরা আম্বিয়া : ৭)
অর্থাৎ হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের যাবতীয় কার্যাবলীই ওহীর দ্বারা মহান আল্লাহ পাক কর্তৃক পরিচালিত হতো। আর এই ওহী দ্বারা নিয়ন্ত্রণ সার্বক্ষণিকভাবেই হতো। যার কারণে হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের স্বপ্ন মুবারকও ওহীর অন্তর্ভুক্ত। যেমন কালামুল্লাহ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে,
قَالَ يَا بُنَيَّ إِنِّي أَرَىٰ فِي الْمَنَامِ أَنِّي أَذْبَحُكَ
অর্থ : “হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, হে আমার ছেলে! (হযরত ঈসমাইলি আলাইহিস সালাম) নিশ্চয়ই আমি স্বপ্নে দেখেছিলাম যে, আমি আপনাকে যবেহ (কুরবানী) করছি।” (সূরা ছফফাত : ১০২)
অতঃপর হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম তিনি উনার ছেলে হযরত ঈসমাইল আলাইহিস সালাম উনাকে মিনার ময়দানে শায়িত করে কুরবানী করার উদ্দেশ্যে গলা মুবারক-এ ছুরি চালাচ্ছিলেন। তখন মহান আল্লাহ পাক তিনি পুনরায় নাযিল করলেন,
قَدْ صَدَّقْتَ الرُّؤْيَا
অর্থ : “নিশ্চয়ই আপনি আপনার স্বপ্নকে সত্যে পরিণত করেছেন।” (সূরা ছফফাত : ১০৫)
অতএব প্রমাণিত হলো যে, হযরত আম্বিয়া আলাইহিমুস সালাম উনারা সার্বক্ষণিকভাবেই ওহীর দ্বারা মহান আল্লাহ পাক কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত। এমনকি উনাদের স্বপ্নও ওহীর অন্তর্ভুক্ত।
মুছুনআর তাই কোন নবী-রসূল আলাইহিস সালাম উনারাসহ সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা নিজ থেকে কোন কথা বলেছেন যার কারণে কোন কোন কথা ও কাজ ভুল হয়েছে – এ ধরণের আক্বীদা পোষণ করা বা এ ধরণের বক্তব্য পেশ করা কাট্টা কুফরীর অন্তর্ভুক্ত। কারণ পূর্ববর্তী নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা যেরূপ মহান আল্লাহ পাক উনার নির্দেশ ব্যতীত নিজের থেকে কোন কথাও বলেননি, কোন কাজও করেননি, সেরূপ সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনিও মহান আল্লাহ পাক উনার নির্দেশ ব্যতীত নিজের থেকে কোন কথাও বলেননি, কোন কাজও করেননি। সে সম্পর্কে স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক তিনি নিজেই কালামুল্লাহ শরীফ-এ ইরশাদ করেন,
وَمَا يَنطِقُ عَنِ الْهَوَىٰ . إِنْ هُوَ إِلَّا وَحْيٌ يُوحَىٰ
অর্থ : “হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ওহী ব্যতীত নিজের থেকে কোন কথা বলেননি।” (সূরা নজম : ৩-৪)
উপরোক্ত আয়াত শরীফ দ্বারা ছাবিত হয় যে, মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পরিপূর্ণভাবে ওহীর দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। আর যিনি ওহীর দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হন তিনি ভুল করেন কি করে? তবে কি ওহীতে ভুল হয়? (নাউযুবিল্লাহ মিন যালিক)
ওহী যেহেতু মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ হতে আসে, তাই ওহীতে কোন ভুল হয় না। সুতরাং সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কর্তৃক ভুল হওয়া তো দূরের কথা কোন নবী-রসূল আলাইহিস সালাম কর্তৃক ভুল হওয়াও সম্পূর্ণরূপে অসম্ভব বিষয়।
সুতরাং নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের ভুল হয় বিশ্বাস করা বা বক্তব্য পেশ করা কাট্টা কুফরী। আর যে এ ধরণের আক্বীদা পোষণ করে বা বক্তব্য পেশ করে সে কাট্টা কাফির এবং চির জাহান্নামী হয়ে যাবে। কারণ এটা মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শানে চরম মিথ্যারোপ।
এ প্রসঙ্গে হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নিজেই ইরশাদ করেন,
مَنْ كَذَبَ عَلَىَّ مُتَعَمِّدًا فَلْيَتَبَوَّأْ مَقْعَدَه مِنِ النَّرِ.
অর্থ : “যে আমার নামে স্বেচ্ছায় মিথ্যা কথা বলে সে যেন (জীবিতবস্থায়) তার স্থান জাহান্নামে নির্ধারণ করে নেয়।” (বুখারী শরীফ, তিরমিযী শরীফ, ইবনে মাজাহ শরীফ, মিশকাত শরীফ)
হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা যেহেতু ওহী দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। তাই উনাদের ভুল হয় বলার অর্থ দাঁড়ায় ওহী ভুল হয়। আর ওহী ভুল হওয়ার অর্থ হলো মহান আল্লাহ পাক উনার ভুল হওয়া। (নাউযুবিল্লাহি মিন যালিক) কারণ ওহী করেন স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন তিনি।
আর এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন,
وَمَنْ أَظْلَمُ مِمَّنِ افْتَرَىٰ عَلَى اللَّـهِ الْكَذِبَ
অর্থ : “ওই ব্যক্তির চেয়ে বড় যালিম কে রয়েছে, যে মহান আল্লাহ পাক উনার নামে মিথ্যারোপ করে।” (সূরা ছফ : ৭)
সুতরাং প্রমাণিত হলো যে, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ভুলের উর্ধ্বে। আর তাই আক্বাইদের কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
اَلْاَنبِيَآءُ عَلَيْهِمُ السَّلاَمُ كُلُّهُمْ مُّنَزَّهُوْنَ عَنِ الصَّغَآئِرِ وَالْكَبَآئِرِ وَالْمُفْرِ وَالْقَبَآئِحِ
অর্থ : “সকল আম্বিয়া আলাইহিমুস সালামই ছগীরা, কবীরা, কুফরী এবং অপছন্দনীয় কাজ হতেও পবিত্র।” (ফিকহুল আকবর)
আক্বাইদের কিতাবে আরো বর্ণিত রয়েছে,
اَلْاَنبِيَآءُ عَلَيْهِمُ السَّلاَمُ مَعْصُوْمُوْنِ
অর্থ : “সকল আম্বিয়া আলাইহিমুস সালাম উনারা মা’ছুম বা নিষ্পাপ।” (ফিকহুল আকবর, শরহে আক্বাইদে নছফী)
সুতরাং এসব কুফরী আক্বীদা পোষণ করা থেকে নিজে বিরত থেকে ও অপরকে বিরত রেখে খালিছ মুসলমান হওয়ার চেষ্টা করুন।
পৌঁছে দেয়া দায়িত্ব পৌঁছে দেয়া হলো!
যার ভুল হয়
মুছুনসে মানুষ ।
আর যে ভুলের উপর স্থির থাকে
সে শয়তান ।
যে ব্যক্তি ভুল হলে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চায়
সে মুমিন
ভুল মানুষ করে । কিভাবে সংশোধিত হয় ?
সাধারন মানুষের সাধারন বিষয়ের ভুল, একে অপরে আলোচনা সমালোচনা যুক্তি তর্কের মাধ্যমে সংশোধন করে ।
ধর্মীয় বিষয়ের ভুল সংশোধনের জন্য আল্লাহ পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেন-
যদি তোমরা কোন বিষয়ে বিবাদে প্রবৃত্ত হয়ে পড়, তাহলে তা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি প্রত্যর্পণ কর (নিসা, আয়াত ৫৯);
সে লোক ইমানদার হবে না, যতক্ষণ না তাদের মধ্যে সৃষ্ট বিবাদের ব্যাপারে তোমাকে [রাসুল স] ন্যায়বিচারক বলে মনে না করে (নিসা, আয়াত ৬৫);
তোমরা আল্লাহ ও রাসুলের সামনে অগ্রণী হয়ো না এবং আল্লাহকে ভয় কর (হুজরাত, আয়াত ১);
আল্লাহর নির্দেশ মান্য কর, নির্দেশ মান্য কর রাসুলের (ইমরান, আয়াত ৩২, ১৩২; নিসা, আয়াত ৫৯; আনফাল, আয়াত ১, ২০, ৪৬; নুর, আয়াত ৫৪, ৫৬; মুহাম্মদ, আয়াত ৩৩; মুজাদালাহ, আয়াত ১৩; আততাগাবুন, আয়াত ১২);
কিন্তু সর্বশক্তিমান আল্লাহ যাদেরকে যুগে যুগে মানুষের মধ্যে শ্রেষ্ঠ করে হেদায়েতের বানী দিয়ে পাঠালেন তারা যদি ভুল করে তাহলে আর কোন সৃষ্টি তা সংশোধনের ক্ষমতা রাখে না, পারে না ।
একমাত্র মহা জ্ঞানী আল্লাহ পারেন ।
আপনি পবিত্র কুরআনের অনেক জায়গায় পাবেন যে আল্লাহ নবী রাসুলগণকে, শান্তনা
দিয়েছেন, সংশোধন করেছেন ।
(নোট) আদম (আঃ) পৃথীবিতে আগমনের ঘটনা, সুরা মাউন, সুরা লাহাব, সুরা
আবাসা, মুহাম্মদ (সাঃ) তার চাচাকে হেদায়াতের জন্য পিড়াপিড়ি ইত্যাদি (আর আছে) । এ
গুলোর ব্যাখ্যা, তাফসির, শানে নুযুল দেখুন পড়ুন বুঝুন ।
অতএব সৃষ্টিগত দিক দিয়ে মাটির তৈরী নবী রাসুলগণকে মহা জ্ঞানী আল্লাহ ওহীর মাধ্যমে
তাদের ভুল সংশোধন করে নিষ্পাপ করেছেন ।
তোমরা কি কিতাবের কিছু অংশ বিশ্বাস কর আর কিছু অংশ অবিশ্বাস কর (সুরাঃ
বাক্বারা-৮৫)
আপনি লিখেছেন, “ভূল রাসুলেরও হত” (নাউযুবিল্লাহ মিন যারিক) এরপরে আবার লিখেছেন- “..............যাকে মানব জাতির হেদায়েতের জন্য, অনুসরণীয়
উত্তরমুছুনএকমাত্র আদর্শ হিসেবে আল্লাহ পাঠালেন ..........।”
মহান আল্লাহ পাক তিনি যাঁকে মানব জাতির হেদায়েতের জন্য,অনুসরণীয় একমাত্র আদর্শ হিসেবে পাঠালেন তিনিই যদি ভুল করেন তাহলে হিদায়েত করেন কিভাবে? আর অনুসরণীয় বা হন কি করে? নাকি সূরা আল ক্বালাম-এর ৪ নং আয়াত শরীফখানা ভুল?
যদি আয়াত শরীফখানা ভুল না হয় তাহলে “ভূল রাসুলেরও হত” এ বক্তব্যটি কাট্টা কুফরী, আর যদি বক্তব্যটি শুদ্ধ থাকে তাহলে আয়াত শরীফ তথা মহান আল্লাহ পাক উনার ভুল! (নাউযুবিল্লাহ) আশা করি সদুত্তর দিবেন!
যার ভুল হয়
উত্তরমুছুনসে মানুষ ।
আর যে ভুলের উপর স্থির থাকে
সে শয়তান ।
যে ব্যক্তি ভুল হলে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চায়
সে মুমিন
ভুল মানুষ করে । কিভাবে সংশোধিত হয় ?
সাধারন মানুষের সাধারন বিষয়ের ভুল, একে অপরে আলোচনা সমালোচনা যুক্তি তর্কের মাধ্যমে সংশোধন করে ।
ধর্মীয় বিষয়ের ভুল সংশোধনের জন্য আল্লাহ পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেন-
যদি তোমরা কোন বিষয়ে বিবাদে প্রবৃত্ত হয়ে পড়, তাহলে তা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি প্রত্যর্পণ কর (নিসা, আয়াত ৫৯);
সে লোক ইমানদার হবে না, যতক্ষণ না তাদের মধ্যে সৃষ্ট বিবাদের ব্যাপারে তোমাকে [রাসুল স] ন্যায়বিচারক বলে মনে না করে (নিসা, আয়াত ৬৫);
তোমরা আল্লাহ ও রাসুলের সামনে অগ্রণী হয়ো না এবং আল্লাহকে ভয় কর (হুজরাত, আয়াত ১);
আল্লাহর নির্দেশ মান্য কর, নির্দেশ মান্য কর রাসুলের (ইমরান, আয়াত ৩২, ১৩২; নিসা, আয়াত ৫৯; আনফাল, আয়াত ১, ২০, ৪৬; নুর, আয়াত ৫৪, ৫৬; মুহাম্মদ, আয়াত ৩৩; মুজাদালাহ, আয়াত ১৩; আততাগাবুন, আয়াত ১২);
কিন্তু সর্বশক্তিমান আল্লাহ যাদেরকে যুগে যুগে মানুষের মধ্যে শ্রেষ্ঠ করে হেদায়েতের বানী দিয়ে পাঠালেন
তারা যদি ভুল করে তাহলে আর কোন সৃষ্টি তা সংশোধনের ক্ষমতা রাখে না, পারে না ।
একমাত্র মহা জ্ঞানী আল্লাহ পারেন ।
আপনি পবিত্র কুরআনের অনেক জায়গায় পাবেন যে আল্লাহ নবী রাসুলগণকে, শান্তনা দিয়েছেন,
সংশোধন করেছেন ।
(নোট) আদম (আঃ) পৃথীবিতে আগমনের ঘটনা, সুরা মাউন, সুরা লাহাব, সুরা আবাসা, মুহাম্মদ
(সাঃ) তার চাচাকে হেদায়াতের জন্য পিড়াপিড়ি ইত্যাদি (আর আছে) এ গুলোর ব্যাখ্যা, তাফসির,
শানে নুযুল দেখুন পড়ুন বুঝুন ।
অতএব সৃষ্টিগত দিক দিয়ে মাটির তৈরী নবী রাসুলগণকে মহা জ্ঞানী আল্লাহ ওহীর মাধ্যমে তাদের ভুল
সংশোধন করে নিষ্পাপ করেছেন ।
তোমরা কি কিতাবের কিছু অংশ বিশ্বাস কর আর কিছু অংশ অবিশ্বাস কর (সুরাঃ বাক্বারা-৮৫)
এই মন্তব্যটি একটি ব্লগ প্রশাসক দ্বারা মুছে ফেলা হয়েছে।
মুছুনএই মন্তব্যটি একটি ব্লগ প্রশাসক দ্বারা মুছে ফেলা হয়েছে।
মুছুন