ইমামের কাজ কি ?
ইমাম বলতে বর্তমানে মসজিদের ইমামকেই বুঝানো হয় । যিনি আমাদের কলেমা, নামায, রোজা, হজ্জ্ব, যাকাত ইত্যাদি কোরআন হাদিস অনুসারে শিক্ষা দিবেন এবং পালন করাবেন । সার্বিকভাবে ইমাম হলো একটি সমাজের নেতা । যিনি শুধু ইবাদত বন্দেগী নয় তার সাথে সমাজের যাবতীয় সমস্যা কোরআন হাদিসের আলোকে সমাধান করবেন ।
কোন সমাজে বিভিন্ন রকম বেদআতী আমল দেখা যায় । ইমামকে বললে বলেন এটা বহুকাল ধরে প্রচলিত হয়ে আসছে । এটা কোরআন হাদিসে না থাকার কথা নয় । তবে আমি যাচাই করে দেখবো ।
আর তাদের অধিকাংশ শুধু আন্দাজ অনুমানের উপর চলে অথচ আন্দাজ অনুমান সত্যের বেলায় কোন কাজেই আসে না (ইউনুস, আয়াত ৩৬)
রাসুল (স) বলেন- বিদআতিদের নামায, রোযা, হজ্জ, উমরাহ, জিহাদ, যাকাত এবং ফরজ নফল কোন এবাদতই আল্লাহর নিকট কবুল হবে না তারা ইসলাম থেকে সেরুপ ভাবে খারিজ হয়ে যাবে, যেভাবে আটা থেকে চুল পৃথক হয়ে যায় (ইবনে মাযাহ ই ফা ১ম খন্ড হা ৪৯)
কোন ইমাম বলেন আমরা মসজিদ কমিটির দ্বারা পরিচালিত । তারা বলেন বলে আমরা পালন করি । আসলে মনে থেকে বেদআত আমল করার ইচ্ছা আমাদের নাই । আপনি জেনে বুঝে অন্যের কথায় বেদআত বা গুনাহ করবেন এটা কোরআন হাদিসের কোথাও কি বলা আছে বা কমিটির লোক গুনাহর জন্য শাস্তি পাবে আপনি পাবেন না এরকম কোন প্রতিশ্রুতি পেয়েছেন কি?
যে সব লোক আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন তদানুযায়ী ফায়সালা করে না তারাই পাপাচারী (মায়েদা, আয়াত ৪৭)
আর কেহ আল্লাহ ও রাসুলের অবাধ্য হলে এবং তাঁহার নির্ধারিত সীমা লংঘণ করলে তিনি তাহাকে অগ্নিতে নিক্ষেপ করবেন । সেখানে সে চির কাল থাকবে এবং তার জন্য লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি রয়েছে (নিসা, আয়াত ১৪); নিশ্চয়ই যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের সাথে বিরোধীতা করে তারা লাঞ্ছিত হবে (মুজাদালা, আয়াত ২০); যারা রাসুলের নির্দেশের বিরুদ্ধাচরণ করে তাদের সতর্ক থাকা উচিত যে তারা যে কোন বিপদের সম্মুখীণ হবে অথবা যন্ত্রনা দায়ক শাস্তি তাদেরকে গ্রাস করবে (নূর, আয়াত ৬৩); এক্ষণে যে কেহ আল্লাহ ও রাসুলের কথা অমান্য করবে, তার জন্য জাহান্নামের আগুন রয়েছে এবং তারা উহাতে চিরকাল থাকবে (জ্বীন, আয়াত ২৩)
মুল ধর্ম গ্রন্থগুলো (কোরআন ও হাদিস) মাতৃ ভাষায় অনুবাদ করা হয়েছে । আপনি যে ইবাদত বন্দেগীর কথা বলবেন এবং করাবেন তার পূর্ণাঙ্গ দলিল অর্থাৎ কোন সুরায়, কোন আয়াতে বা কোন হাদিস গ্রন্থের, কোন খন্ডে, কোন অধ্যায়, কোন পৃষ্টায়, কত নম্বর হাদিসে আছে বলবেন । কারন পূর্বের অনেক ইবাদত বন্দেগী কোরআন হসদিসের অনুসারে না হওয়ায় বেদআতে পরিণত হয়েছে । আমাদের ইবাদতে অনেক বিষয়ে সমস্যার সম্মুখীন হই । কোন লোক আমাদের ইবাদতে বলে এটা কোথায় পেয়েছেন কোরআন হাদিসে এটাতো এভাবে আছে বলে পূর্ণাঙ্গ দলিল পেশ করে তখন বিভ্রান্তিতে পড়ে যাই । আমাদের টা ভুল না তার টা । তখন জানার আগ্রহ জাগে । আমরা সাধারণ লোক আমাদের মসজিদের ইমামের কাছে যাই । আপনারা দলিল না দিয়ে মৌখিক ভাবে বলেন ।
কেউ বলে এ দলিল অন্য মাযহাবের, আহলে হাদিসদের, ওমুক পীরের ইত্যাদি ।
কোরআন হাদিস কি এ রকম দল ভিত্তিক হয়েছে যে তারা মানবে আমরা মানবো না? যদি না মানেন তাহলে আপনি যেটা মানেন তার দলিল পেশ করেন না কেন?
আবার অনেক ইমাম বলে ভাই আমার সময় নেই আপনি ওমুক ব্যক্তির কাছে যান । এভাবে বললে আপনি জানেন না বলে ধারনা হবে । প্রকৃতপক্ষে আপনি জানেন বা না জানেন অন্যের কাছে না পাঠিয়ে আপনিই কিছুদিন সময় নিয়ে এর উত্তর সংগ্রহ করে জানাতে পারেন ।
আল্লাহ পাক পবিত্র কোরআনে বলেন, জ্ঞানিদের জিজ্ঞেস কর যদি তোমাদের জানা না থাকে (নাহল, আয়াত ৪৩)
আমাদের সমাজে ধর্মীয় বিষয়ে কে বেশী জ্ঞানী? উত্তরে সকলেই বলে, আমাদের মসজিদের ইমাম । অতএব সমসজের লোক আপনাকেই জিজ্ঞাসা করবে । আপনাকেই কোরআন হাদিসের পূর্ণাঙ্গ দলিল আকারে জানাতে হবে ।
হে যারা ঈমান এনেছ পরিপূর্ণরূপে ইসলামে প্রবেশ কর (বাক্বারা, আয়াত ২০৮); আর তোমরা মুসলমান না হয়ে মৃত্যুবরণ করো না (ইমরান, আয়াত ১০২); যদি তোমরা কোন বিষয়ে বিবাদে প্রবৃত্ত হয়ে পড়, তাহলে তা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি পত্যর্পণ কর (নিসা, আয়াত ৫৯); তোমরা দ্বীনকে প্রতিষ্ঠিত কর এবং তাতে অনৈক্য সৃষ্টি করো না (আশ শুরা, আয়াত ১৫);
রাসুল (সঃ) বলেছেন, তোমরা যদি ২টা জিনিষ আঁকরে ধরে থাক তাহলে কখনই পথভ্রষ্ট হবে না, এ দু’টি জিনিষ হলো আল্লাহর কুরআন ও আমার সুন্নাহ (মিশকাত ১ম খন্ড হা ১৭৭)
এ সংক্ষিপ্ত আলোচনা আমাদের সকল সমাজের সকল ইমামদের নিরপেক্ষ ভাবে বুঝার তাওফিক আল্লাহ পাক দান করুন । কোন ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমার চোখে দেখবেন । আপনারা সম্মাণিত ব্যক্তি আপনাদের সম্মান যেন ক্ষুন্ন না হয় সে দিকে আপনাদেরই সজাগ থাকতে হবে ।
কোন লোক যে মাযহাবের হোক, যে দলের হোক, যে পীরের অনুসারী হোক যা জানতে চায় তা কোরআন হাদিসের সঠিক দলিল আকারে জানাবেন ।
আমার নামায, আমার কুরবানী এবং আমার জীবন ও মরণ বিশ্ব প্রতিপালক আল্লাহরই জন্য (আনআম, আয়াত ১৬২)
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন