ভিক্ষুক বা ফকির
শব্দটির সাথে সকলেই পরিচিত । যা পড়া বা শোনা মাত্রই সকলের মনে একজন হতদরিদ্র মানুষ
যার এক বেলা খাবারের যোগার নেই । মানুষের দ্বারে দ্বারে গিয়ে প্রতি বেলার অন্ন
সংগ্রহ করতে হয় । এ রকম মানুষের ছবি ভেসে উঠে । এরাও ফকির বা ভিক্ষুক । তবে এখানে
আমি ভিন্ন ধরনের ভিক্ষুকের পরিচয় তুলে ধরব ।
ভিক্ষুক কত প্রকার?
আমার মতে ভিক্ষুক
দুই প্রকারঃ ১, অশিক্ষিত ভিক্ষুক ও
২, শিক্ষিত ভিক্ষুক ।
১,১ অশিক্ষিত ভিক্ষূকঃ
এরাই মানুষের
দ্বারে দ্বারে ঘুরে জিবিকা অর্জন করে । যে যা দেয় তাই গ্রহন করে । অতিরিক্ত কিছু
দাবি করে না । এদেরকে ভিক্ষা দিলে ধর্মীয় মতে অনেক কল্যান, ছওয়াব পাওয়া যায় । এদেরকে
দান করলে ইসলামিক নিয়মে দান করনে ওয়ালার ধন বাড়বে । এদেরকে বেশি করে যাকাত দিবেন ।
আমরা বাংলাদেশের সকল সচ্ছল ব্যক্তি এদের দিকে সু-নজর দিলে তাদের অভাব পূর্ণ হয়ে
যাবে । আমরা ধনীরা যদি আমাদের যাকাতকে যথাযথ শরিয়া নিয়মে দেই তাহলে এমন এক সময়
আসবে যেখানে দেখা যাবে দান খয়রাত করার মত কোন অশিক্ষিত ভিক্ষুক আর খুজে পাওয়া যাবে
না ।
২,১ শিক্ষিত ভিক্ষুকঃ
অশিক্ষিত ভিক্ষুককে
সকলেই বুঝতে পারলেন । কিন্তু সকলের মনে আগ্রহ শিক্ষিত ভিক্ষুক আবার কে? অনেক
শিক্ষিত লোক আবার মনোক্ষুন্ন হতে পারেন । তাই বিষয়টি ভালো করে পড়ার ও বুঝার জন্য
অনুরোধ করছি ।
আসলে শিক্ষিত হয়ে
বিভিন্ন বিপর্যয়ের কারনে মানুষ একে অপরের কাছে হাত বাড়াতে পারে । এ ধরনের শিক্ষিত
ফকির ও ভাল । তাদেরকেও সাহায্যার্থে দেশ বাসির এগিয়ে আসাও কল্যান ও ছওয়াবের কাজ ।
অনেক শিক্ষিত লোক
যাদের কোন সমস্যা নেই । তারা যদি জনগনের জন্য, সমাজের জন্য মানুষের কাছে হাত বাড়ায়
তারাও ভাল । এ ধরনের কর্মকান্ডে সকল নাগরিকের শরিক হওয়া অত্যন্ত কল্যান ও ছওয়াবের
কাজ ।
আরো অনেক ভালো
শিক্ষিত লোক আছে যারা ব্যক্তির জন্য, সমাজের জন্য, দেশের জন্য, জনগণের জন্য ভালো ।
যাদের দারা সকলেরই কম বেশি উপকার হবে ।
ভালোর বর্ণনা আর
বিস্তারিত লেখলাম না । যাহোক শিক্ষিত লোক মনোক্ষুন্ন হবেন না । আপনারা যে যে
অবস্থানে আছেন সকলেই ভালো বুঝেন ।
দুধকে আমরা আদর্শ
খাদ্য জানি । এই আদর্শের মধ্যে যদি এক বিন্দু টক মিশানো হয় । তার আসল রুপ বা আদর্শ
গুন থাকে না ।
আমি এখন খারাপ
শিক্ষিত ভিক্ষুক বা ফকির এর বিবরণ উল্লেখ করবো ।
আমরা শিক্ষিত লোক
অনেকেই ব্যক্তিগত, বেসরকারি, সরকারি ইত্যাদি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত থাকি । আমরা
ব্যক্তিগত আয় বা বেতন যা পাই তা দিয়ে জীবিকা অর্জন করি ।
এমন অনেক লোক আছে
যাদের ব্যয়ের চেয়ে আয় বেশি । তারপরও তারা ভিক্ষুক সেজে বসে থাকেন । তাদের অভাব যেন
কোন দিনই পূর্ণ হচ্ছে না । এতক্ষণে আমি আকার ইঙ্গিতে যে খারাপ শিক্ষিত ভিক্ষুকের
কথা বলছি তা অনেকে হয়তো অনুধাবন করতে পারছেন ।
আমি ঐ সমস্ত শিক্ষিত লোকের কথা বলছি যারা বিভিন্ন
ধরনের কাজের বিনিময়ে অবৈধ ভাবে টাকা দাবি করে । অর্থাৎ ঘুষ চায় ।
ঘুষ নেয়া ও দেয়া
উভয়ই অপরাধ । এ ধরনের কাজ থেকে আমরা বিরত থাকার চেষ্টা করবো ।
যারা ঘুষ নেয় তারা
বলে অনেকে আমাকে ইচ্ছায় খুশি মনে দেয় ।
আসলে আপনি বাহ্যিক
দৃষ্টি বলেন । অন্তর দৃষ্টিতে অনুধাবন করুন যে কাজের জন্য আপনাকে মাসিক বেতন দেয়া
হয় সে কাজ কেউ ঘুষ দ্বারা করে নিয়ে খুশি হতে পারে কি ?
জরিপ করে দেখুন ঘুষ
দিলে কেউ খুশি হয় এ রকম একজনও খুজে পাবেন না ।
বরং আপনার অগোচরে
খারাপ মন্তব্য করে । যে অবৈধ ভাবে অর্থ সম্পদ অর্জন করবে তার মনে শান্তি থাকবে না ।
নানান ধরনের রোগ, শোক, টেনশন লেগেই থাকবে ।
এ ধরনের শিক্ষিত ভিক্ষুক কে ঘুষ বা ভিক্ষা দিলে কারোর
কোন উপকার হবে না ।
অনেকে বলে আমরা
অনেক ক্ষেত্রে পরিস্থিতির স্বীকার হয়ে পড়ি ।
না দিয়ে পারি না ।
তাদের উদ্দেশে
বলি-এ অবস্থায় দিলে আপনার কোন অপকার হবে না ।
যে নিবে তারই ক্ষতি
হবে, তার মনের শান্তি দুরিভূত হবে, সে নানা ধরনের পেরেশানীর মধ্যে থাকবে ।
তবে যারা
পরিস্থিতির স্বীকার এ রকম ক্ষেত্রে শুধু নিরবে সহ্য করলে হবে না । আপনার সামর্থ
অনুযায়ী প্রতিহত করার চেষ্টা করতে হবে ।
সুযোগ বুঝে উচিৎ
শিক্ষা দিতে হবে ।
আর এ কথা সকলেরই
মনে রাখতে হবে ঘুষ নেয়া ও দেয়া উভয়ই অপরাধ
।
আমরা যারা ঘুষের আশায় থাকি সকলেই নিজের শান্তির জন্য,
সমাজের শান্তির জন্য, দেশের শান্তির জন্য, সর্বোপরি জনগণের শান্তির জন্য তা পরিহার
করার দৃঢ় অঙ্গিকার ব্যক্ত করি ।
অনুরুপ ভাবেঃ
শয়তান দুই প্রকার
১; ধর্ম বিরোধি শয়তানঃ
যার কাজ ধর্মের
নির্দেশের বিপরীত করা ।
২; ভালো শয়তানঃ
যার কাজ ধর্মের
নির্দেশে সংযোজন করা বা বিয়োজন করা অর্থাৎ বেদআত তৈরী করা ।
বর্তমানে ভালো
শয়তানের প্রভাব বেশী । এর নির্দেশে সকলের সতর্ক থাকতে হবে । অনেকে বেখেয়ালী ভাবে
এর ধোকায় পড়ে যায় ।
এই দুই প্রকার শয়তানই ক্ষতিকর ।
চোরও দুই প্রকার
১; অশিক্ষিত চোরঃ
যারা গোপনে মানুষের
মালামাল চুরি করে ।
ধরা পড়লে ছাড় নাই গণ
পিটানি মাফ নাই ।
২; শিক্ষীত চোরঃ
যারা সুকৌশলে
বিভিন্ন পণ্যে ভেজাল করে বা কম বেশি করে । বিভিন্ন কর্মকান্ডে যা ব্যয় হয় তার চেয়ে
হিসাবে বেশি দেখায় ।
এরা ধরা ছোয়ার
বাইরে । দুই একজন ধরা পড়লেও আলোর কনার মত কোন ফাক দিয়ে বের হয়ে যায় অনেকে টের পায়
না ।
এই দুই প্রকার চোরও জনগণের জন্য ক্ষতিকর ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন