সম্মানিত মুসলিম ভাইয়েরা, আস্সালামু আ’লাইকুম । আমাদের ধর্ম ইসলাম । ইসলাম অর্থ আল্লাহর ইচ্ছার কাছে বশ্যতা স্বীকার ও সমর্পন করা । পরিভাষায় ইসলাম হচ্ছে আল্লাহর পক্ষ থেকে আসা দ্বীনের নাম যা আমাদের রাসুল মুহাম্মদ (স) এর মাধ্যমে পরিপূর্ণতা লাভ করেছে । আমরা জন্মগতভাবে আমাদের বাবা মায়ের বা পূর্ব পুরুষের ইবাদতের পদ্ধতি অনুসরণ করি । যদি শিরোনামের প্রশ্নটি করা হয় তাহলে সবাই মুখে বলেন হ্যাঁ আমরা তাই করি । বাস্তবে দেখা যাক আমাদের ইবাদতের কতটুকু তাঁর অনুসরণ করি ।
কলেমা- আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই মুহাম্মদ (স) তার বান্দা ও রাসুল ।
আল্লাহ ও রাসুলের নির্দেশ মান্য করতে হবে এবং কোরআন হাদিস বহির্ভূত মানব রচিত কোন নির্দেশ মান্য করা যাবে না ।
যে তাগুত (আল্লাহ বিরোধী সব কিছুকে) অস্বীকার ও অমান্য করে আর আল্লাহর উপর ঈমান আনে, সে এমন এক সুদৃঢ় অবলম্বনকে আঁকড়ে ধরে যা ভাঙ্গবার নয় (বাক্বারা, আয়াত ২৫১); আমি সকল জাতির কাছে রাসুল পাঠিয়েছি । তারা সবাই নিজ নিজ জাতিকে এ বলে আহবান জানিয়েছে, তোমরা আল্লাহর ইবাদত কর এবং তাগুতকে বর্জন কর (নাহল, আয়াত ৩৬)
বর্তমানে কোরআন ও হাদিস গ্রন্থগুলো আমাদের মাতৃ ভাষায় অনুবাদ করা হয়েছে । আপনি ইচ্ছা করলে আপনার ধারে কাছে কোন গ্রন্থাগার থেকে তা ক্রয় করে নিতে পারেন অথবা কোন মাদ্রাসায় গিয়ে তা দেখতে পড়তে পারেন । মুল ধর্মগ্রন্থ (কোরআন হাদিস) না দেখে আমরা অধিকাংশ লোকই অন্ধ বিশ্বাসে কারো রচিত গ্রন্থ বা মৌখিক কথার উপর বা পূর্বপুরুষদের অনুরুপই ইবাদত করে যাচ্ছি । যার কোন পূর্ণাঙ্গ দলিল নাই অর্থাৎ আপনি যে ইবাদত করেন তা কোরআনের কোন সুরায়, কোন আয়াতে আছে অথবা হাদিসের কোন গ্রন্থে, কোন খন্ডে, কোন অধ্যায়, কোন পৃষ্টায় বা কত নম্বর হাদিসে আছে তা আমাদের জানা নাই । এবার চিন্তা করে বলেন কিভাবে আপনি তাগুতকে অস্বীকার করেন এবং শিরোনামের প্রশ্নটি মেনে চলেন?
সালাত বা নামায- নামায কায়েম করুন । নিশ্চয়ই নামায অশ্লীল ও গর্হিত কার্য থেকে বিরত রাখে (আনকাবুত, আয়াত ৪৫)
আপনার নামায যদি কোরআন হাদিস মোতাবেক সহীহ শুদ্ধ না হয় এবং লোক দেখানোর জন্য পড়েন তা কোন দিনই আনকাবুত ৪৫ আয়াত এর মর্যাদা পাবে না ।
অতএব দুর্ভোগ সে সব নামাজির যারা তাদের নামাজ সম্বন্ধে বেখবর । যারা তা লোক দেখানোর জন্য করে (মাউন, আয়াত ৪, ৫, ৬)
যদি প্রশ্ন করি আপনার নামায কোরআন হাদিসের কোথায় পেয়েছেন? বলতে পারেন না তাহলে চিন্তা করে বলেন কিভাবে শিরোনামের প্রশ্নটি মেনে চলেন!
সিয়াম বা রোজা- তোমাদের উপর রোজা ফরয করা হয়েছে (বাক্বারা, আয়াত ১৮৩); রমযান মাসই হল সে মাস…………এ মাসের রোযা রাখবে (বাক্বারা, আয়াত ১৮৫) ………আর পানাহার কর যতক্ষণ না কাল রেখা থেকে ভোরের শুভ্র রেখা পরিষ্কার দেখা যায় । অতপর রোযা পূর্ণ কর রাত পর্যন্ত………(বাক্বারা, আয়াত ১৮৭); যে ব্যক্তি লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে রোযা পালন করল সে শির্ক করল (মুসনাদে আহমদ ১৯\২২১; আল ফাতহুর রাব্বানী )
এমনিভাবে রোযার নিয়ম নীতি পরিষ্কার ভাবে কোরআন হাদিসে বর্ণনা করা হয়েছে । আমরা কজন তা জানি বা জানতে চাই । আপনার রোযার নিয়ম নীতি কোরআন হাদিসের কোথায় আছে প্রশ্ন করলে বলতে পারেন না তাহলে শিরোনামের প্রশ্নটি কিভাবে মেনে চলেন !
যাকাত ও হজ্জ্ব- যাকাত ও হজ্জ্ব সম্পদশালী ব্যক্তিদের জন্য । যাদের আল্লাহ পাক ধন সম্পদ দান করেছেন তা থেকে কোরআন ও হাদিস অনুসারে যাকাত দিবেন এবং হজ্জ্ব পালন করবেন । কারো মৌখিক কথা না শুনে কোরআন হাদিসের পূর্ণাঙ্গ দলিল নিয়ে তা মুল গ্রন্থের সাথে মিলিয়ে নিবেন যাতে আপনার ধন সম্পদে কোন রকম ভেজাল না থাকে ।
আমরা বেশী সংখ্যক লোকই সাধারন শিক্ষায় শিক্ষিত । আবার অনেকে বিভিন্ন রকম ব্যবসা, চাকুরী, সাংসারিক কাজে লিপ্ত থাকি । আমরা কোরআন হাদিস পড়ার বা দেখার খুব একটা সময় পাইনা । আমাদের ইবাদত বন্দেগীর সকল দলিল খুজে বের করা আমাদের জন্য সহজতর নয় । তাহলে আমরা কি করবো? আল্লাহ পাক পবিত্র কোরআনে বলেন, জ্ঞানিদের জিজ্ঞেস কর যদি তোমাদের জানা না থাকে (নাহল, আয়াত ৪৩)
আমাদের সমাজে ধর্মীয় বিষয়ে কে বেশী জ্ঞানী? উত্তরে সকলেই বলে আমাদের মসজিদের ইমাম । তাকে আমরা জিজ্ঞাসা করব এবং কোরআন হাদিসের পূর্ণাঙ্গ দলিল নেব । উক্ত দলিল আমরা প্রতিদিন দশ, পনের মিনিট সময় করে বা ছুটির দিনে মুল গ্রন্থগুলোর সাথে মিলিয়ে নেব । এভাবেই আমরা আমদের সকল ইবাদত কোরআন হাদিস অনুসারে সঠিক করতে পারবো এবং শিরোনামের প্রশ্নটির বাস্তব সমাধান পাব । ইনশাআল্লাহ
যারা আমার পথে সাধনায় আত্মনিয়োগ করে আমি অবশ্যই তাদেরকে আমার পথে পরিচালিত করব । নিশ্চয় আল্লাহ সৎকর্মপরায়নদের সাথে আছেন (আনকাবুত, আয়াত ৬৩)
যারা আমার পথে সাধনায় আত্মনিয়োগ করে আমি অবশ্যই তাদেরকে আমার পথে পরিচালিত করব । নিশ্চয় আল্লাহ সৎকর্মপরায়নদের সাথে আছেন (আনকাবুত, আয়াত ৬৯) ৬৩ নয়।
উত্তরমুছুন