সাহরী
« إِنَّ بِلاَلاً
يُؤَذِّنُ بِلَيْلٍ ، فَكُلُوا وَاشْرَبُوا حَتَّى يُؤَذِّنَ ابْنُ أُمِّ
مَكْتُومٍ »
হযরত আয়েশা (রাজিঃ)
বলেন, বেলাল রাত্রি থাকতে আযান দেয় ।
তাই রাসুল (সাঃ) বলেছেন, তোমরা খানা-পিনা করতে থাক যতক্ষণ না ইবনে উম্মে মাকতুম আযান দেয় । কেননা সে ফজর না হওয়া পর্যন্ত আযান দেয় না । -সহিহ
আল বুখারী ২/২৪০ হাদিস নং ১৭৮৩
সাহরী খেতে খেতে
আযান হয়ে গেলে তক্ষণাৎ খানা না ছেড়ে তাড়াতাড়ি
খেয়ে নেয়া দরকার ।
হযরত আবু হুরায়রা
(রাজিঃ) বলেন, রাসুল (সাঃ) বলেছেন, যখন তোমাদের কেউ আযান শুনে আর খাওয়ার বাসন তার
হাতে থাকে তখন সে যেন তা রেখে না দেয় যতক্ষণ না তা থেকে আপন আবশ্যক পূর্ণ করে
।-সহিহু সুনানি আবিদাউদ ২/৫৭ হাদিস নং ২৩৫০
নিয়ত
হযরত হাফছা (রাজিঃ)
থেকে বর্ণিত, নবী (সাঃ) বলেছেন, যে
ব্যাক্তি ফজরের পূর্বে রোযার নিয়ত করবেনা তার রোযা হবে না । -সহিহু সুনানি
আবিদাউদ ২/৮২ হাদিস নং ২৪৫৪
মাকরুহ হয় না
হযরত আবু হুরায়রা
(রাজিঃ) বলেন, নবী (সাঃ) বলেছেন, যদি কোন
ব্যক্তি ভুলে কিছু খায় অথবা পান করে তখন সে রোযা পূর্ণ করবে, কারণ তাকে
আল্লাহপাকই খাওয়ালেন এবং পান করালেন । -সহিহু আল বুখারী ২/২৪৬ হাদিস নং ১৭৯৫
রোযা অবস্থায় মজী
বের হলে অথবা স্বপ্নদোষ হলে রোযা ভাঙ্গে না এবং মাকরুহও হয় না ।
হযরত আব্দুল্লাহ
ইবনে আব্বাস (রাজিঃ) বলেন, কোন বস্তু শরীরে প্রবেশ করলে রোযা ভাঙ্গে । শরীর থেকে কিছু বের হলে রোযা ভাঙ্গে না ।-সহিহ
আল বুখারী ২/২৫০ তাগলীক ৩/১৭৮
হযরত আতা এবং
কাতাদা (রহঃ) বলেন, রোযাদার নিজের থুথু
গিলে খেতে পারবে ।-সহিহ আল বুখারী ২/২৪৬ তাগলীক ৩/১৬৬
হযরত হাসান (রাজিঃ)
বলেন, যদি মাছি রোযাদের গলায় চলে যায়,
তাতে কোন অসুবিধা হবে না ।-সহিহ আল বুখারী ২/২৪৫ তাগলীক ৩/১৫৬
হযরত আবুবকর ইবনে
আব্দুর রহমান (রহঃ) বলেন, আমি এবং আমার পিতা হযরত আয়েশা (রাজিঃ) এর কাছে গেলাম ।
তিনি বললেন, আমি স্বাক্ষ্য দিচ্ছি যে, রাসুল (সাঃ) স্বপ্নদোষ নয় বরং স্ত্রী
সহবাসের কারণে জনাবতওয়ালা হয়ে সকাল করতেন এবং গোসল ব্যতীত রোযা রাখতেন । [তারপর
ফজরের নামাযের পূর্বে গোসল করতেন] এরপর আমরা হযরত উম্মে সালমা (রাজিঃ) এর কাছে
গেলাম । তিনিও একই কথা বললেন ।-সহিহু আল বুখারী ২/২৪৫ হাদিস নং ১৭৯৪
হযরত আয়েশা (রাজিঃ)
বলেন রাসুল (সাঃ) জনাবত অবস্থায়
খাওয়া-দাওয়া বা নিদ্রা যেতে চাইলে প্রথমে নামাযের ওযুর মত ওযু করে নিতেন ।-মুসলিম
শরীফ ২/৭৪ হাদিস নং ৫৯১
হযরত উমর (রাজিঃ)
বলেন, একদা আমার মন চাইল এবং রোযাবস্থায় আমি আমার স্ত্রীকে চুম্বন করলাম । অতঃপর
আমি নবী (সাঃ) এর খেদমতে উপস্থিত হলাম এবং বললাম, আজ আমি এক বড় ভুল করে ফেলেছি,
রোযাবস্থায় স্ত্রীকে চুম্বন করেছি । রাসুল (সাঃ) জিজ্ঞাসা করলেন, যদি তুমি রোযাবস্থায়
কুলি করতে তাহলে কী করতে ? আমি বললাম, কুলিতে তো কোন অসুবিধা নেই । নবী (সাঃ)
বললেন, তাহলে আর কোথায় অসুবিধা আছে ? অর্থাৎ চুম্বন করলেও কোন অসুবিধা নেই
।-আহমাদ, সহিহু সুনানি আবিদাউদ ২/৬৪ হাদিস নং ২৩৮৫
হযরত আয়েশা (রাজিঃ)
বলেন, রাসুল (সাঃ) রোযাবস্থায় চুম্বন
করতেন এবং জড়িয়ে ধরতেন । কিন্তু তিনি সবচেয়ে বেশী নিজ প্রবৃত্তির উপর দমন
ক্ষমতা রাখতেন ।-সহিহু আল বুখারী ২/২৪৪ হাদিস নং ১৭৯০
হযরত আবু হুরায়রা
(রাজিঃ) বলেন, রাসুল (সাঃ) এর কাছে এক ব্যক্তি এসে জিজ্ঞাসা করলেন, রোযাবস্থায়
স্ত্রীকে জড়িয়ে ধরা যাবে কি ? হুজুর (সাঃ) তাকে অনুমতি দিলেন । তারপর আর এক
ব্যক্তি এসে একই প্রশ্ন করলেন । নবী (সাঃ) তাকে নিষেধ করে দিলেন ।
হযরত আবু হুরায়রা
(রাজিঃ) বলেন, যাকে নবী (সাঃ) অনুমতি দিলেন
সে ছিল বৃদ্ধ । আর যাকে নিষেধ করেছিলেন সে ছিল এক যুবক ।-সহিহু সুনানি আবিদাউদ
২/৬৫ হাদিস নং ২৩৮৭
হযরত আব্দুল্লাহ
ইবনে আব্বাস (রাজিঃ) বলেন, নবী (সাঃ) রোযা
অবস্থায় শিঙ্গা নিয়েছিলেন ।-সহিহু আল বুখারীভ২/২৫০ হাদিস নং ১৮০০
বিঃ দ্রঃ চিকিৎসার
উদ্দেশ্যে সুঁই, ব্লেড অথবা ক্ষুর দ্বারা শরীরের কোন অংশ থেকে রক্ত বের করে ফেলাকে
শিঙ্গা লাগান বলা হয় ।
না জায়েয
হযরত আবু হুরায়রা
(রাজিঃ) বলেন, রাসুল (সাঃ) বলেছেন, যে
ব্যক্তি মিথ্যা কথা এবং মিথ্যাচার ছাড়েনি তার খানা-পিনা ছেড়ে দেওয়াতে আল্লাহর কোন
কাজ নেই ।-সহিহু আল বুখারী ২/২৩৪ হাদিস নং ১৭৬৮
ভঙ্গকারী
হযরত আবু হুরায়রা
(রাজিঃ) বলেন, আমরা নবী (সাঃ) এর নিকট বসেছিলাম । এমন সময় এক ব্যক্তি এসে বলল, ইয়া
রাসুলুল্লাহ! আমি ধ্বংস হয়েছি । হুজুর বললেন, তোমার কি হয়েছে ? সে বলল, আমি আমার স্ত্রীর সাথে সহবাস করেছি তখন আমি
রোযাদার ছিলাম । রাসুল (সাঃ) বললেন, তোমার কি কোন গোলাম আছে যা আজাদ করে দিতে
পার ? সে বলল, না । অতঃপর হুজুর বললেন, তোমার কি শক্তি আছে যে একসাথে দুই মাস রোযা রাখতে পার ? সে বলল না ।
তারপর হুজুর বললেন, তোমার কি সঙ্গতি আছে যে, ষাটজন
মিসকিনকে খানা খাওয়াতে পার ? সে বলল, না ।
তারপর হুজুর (সাঃ)
বললেন, আচ্ছা তুমি বস! এরপর নবী (সাঃ) অপেক্ষা করতে লাগলেন এবং আমরাও এ অবস্থায়
ছিলাম এমন সময় নবী (সাঃ) কে খেজুর পূর্ণ একটি ঝুড়ি দেয়া হল । তখন হুজুর (সাঃ)
বললেন, প্রশ্নকারী লোকটি কোথায় ? সে বলল, হুজুর! এই যে, আমি । হুজুর (সাঃ) বললেন,
এটি নিয়ে দান করে দাও । সে বলল, ইয়া রাসুলুল্লাহ! আমার অপেক্ষা অধিকতর মিসকিন কে ?
আল্লাহর শপথ, মদীনায় এ প্রস্তরময় দু’প্রান্তের মধ্যে আমাদের পরিবার অপেক্ষা অধিকতর মিসকিন পরিবার আর নেই । একথা শুনে নবী
(সাঃ) হেসে দিলেন যাতে তাঁর সম্মুখের দাঁতসমুহ দেখা গেল । অতঃপর বললেন, আচ্ছা তবে তুমি তোমার পরিবারকেই খাওয়াও ।-সহিহু
আল বুখারী ২/২৪৮ হাদিস নং ১৭৯৮
হযরত আবু হুরায়রা
(রাজিঃ) বলেন, রাসুল (সাঃ) বলেছেন, রোযাবস্থায়
যার বমি হয়েছে তাকে কাজা আদায় করতে হবে না । আর যে ব্যক্তি ইচ্ছা করে বমি
করেছে সে যেন কাজা আদায় করে ।-ইবনে মাজাহ, সহিহু সুনানি আবিদাউদ ২/৩০০ হাদিস নং
২৩৮০
হযরত আবু যযিনাদ
বলেনঃ শরীয়তের বিধি-বিধান কখনো যুক্তি বর্হির্ভূত হয়ে থাকে, কিন্তু মুসলমানকে তাও
মেনে নেওয়া আবশ্যক । এরূপ একটি শরয়ী বিধান হলো ঋতুবর্তী মহিলা রোযার কাজা আদায় করবে কিন্তু নামাযের কাজা আদায় করবে
না ।-সহিহু আল বুখারী ২/২৫৪ তাগলীক ৩/১৮৯
না রাখার অনুমতি
হযরত আয়েশা (রাজিঃ)
বলেন, হামযা ইবনে আমর আসলামী (রাজিঃ) রাসুল (সাঃ) এর কাছে জিজ্ঞাসা করলেন, হুজুর আমি কি সফরে রোযা রাখব ? তিনি বেশী বেশী
রোযা রাখতেন । নবী (সাঃ) বললেন, যদি চাও
রাখতে পার, আর যদি চাও নাও রাখতে পার ।-মুসলিম, সহিহ আল বুখারী ২/২৫১ হাদিস নং
১৮০৩
হযরত আনাস (রাজিঃ)
থেকে বর্ণিত, রাসুল (সাঃ) বলেছেন, আল্লাহপাক মুসাফির থেকে অর্ধেক নামায এবং মুসাফির, স্তন্যদানকারিনী মাতা ও গর্ভবতী
স্ত্রীলোক থেকে রোযা উঠিয়ে দিয়েছেন ।-তিরমীযি, নাসাঈ, ইবনে মাযাহ, সহিহু
সুনানি আবিদাউদ ২/৭১ হাদিস নং ২৪০৮
হযরত ইবনে আব্বাস
(রাজিঃ) বলেন, বৃদ্ধের জন্য রোযা না রাখার
অনুমতি আছে । কিন্তু সে প্রত্যেক রোযার বদলে এক মিসকিনকে দু’বেলা খানা খাওয়াইবে এবং তার উপর কোন কাজা নেই ।-দারা
কুতনী ১/দ্বিতীয় অংশ পৃঃ ১৬৫ হাদিস নং ২৩৫৫
নিষিদ্ধ
হযরত আবু উবাইদা
(রাজিঃ) বলেন, আমি হযরত উমর ইবনুল খাত্তাব (রাজিঃ) এর সাথে ঈদের নামাজ আদায় করেছি
। তিনি বলছেন, এ দুই দিনের রোযা রাখা থেকে নবী (সাঃ) নিষেদ করেছেন । প্রথম দিন হলো, যখন তোমরা রোযা শেষ কর, আর
দ্বিতীয় দিন হলো, যখন তোমরা কোরবানীর গোস্ত খাবে ।-সহিহ আল বুখারী ২/২৭২ হাদিস
নং ১৮৫১
হযরত উম্মুল ফজল
(রাজিঃ) বলেন, লোকেরা আরাফার দিন নবী (সাঃ) রোযা রেখেছেন বলে মনে করেছিলেন, আমি
হুজুর (সাঃ) এর কাছে দুধ পাঠালাম, হুজুর (সাঃ) তা পান করলেন, তখন নবী (সাঃ) আরাফায়
খুতবা প্রদান করতেছিলেন ।-মুসলিম, সহিহ আল বুখারী ২/২৭৪ হাদিস নং ১৯৪৯
হযরত আবু হুরায়রা
(রাজিঃ) বলেন, নবী (সাঃ) বলেছেন, যখন
শাবান অর্ধেক বাকি থাকবে (অর্থাৎ রমযানের ১৫ দিন পূর্বে) তখন আর নফল রোযা রাখিও না
।-সহিহু সুনানু তিরমিযী ৩/১১৫ হাদিস নং ৭৩৮
ইফতার
হযরত আব্দুল্লাহ
ইবনে উমর (রাজিঃ) বলেন, নবী (সাঃ) যখন ইফতার করতেন, তখন এই দোয়া পড়তেন,
যাহাবায যোয়ামাউ ওয়াব্তাল্লাতিল উরুকু ওয়া ছাবাতাল আজরু
ইনশাআল্লাহ ।
অর্থঃ তৃষ্ণা দূর
হল, শিরা-উপশিরা সিক্ত হল এবং আল্লাহ চাহেন তো ছওয়াব নির্ধারিত হল ।-সহিহু সুনানি
আবিদাউদ ২/৫৯ হাদিস নং ২৩৫৭
হযরত আনাস (রাজিঃ)
বলেন, রাসুল (সাঃ) যখন কারো কাছে ইফতার করতেন তখন এই দোয়া পড়তেন,
আফত্বারা ইনদাকুমুস্সায়িমুন ওয়া আকালা ত্বায়ামাকুমুল
আবারারু ওয়া তানাযযালাত আলাইকুমুল মালায়িকাতু ।-আহমাদ, সহিহুল জামিউস সাগীর ৪র্থ
খন্ড হাদিস নং ৪৫৫৩
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন